নিজস্ব প্রতিনিধি , বাঁকুড়া :- বাঁকুড়া জেলার মেজিয়া থানা এলাকা অবৈধ বালি ও কয়লা পাচারকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে । বহুদিন ধরেই এলাকাতে রমরমিয়ে চলছে অবৈধ কয়লা ও বালি খনন কাজ । মেজিয়া এলাকার অর্ধ গ্রাম, রামচন্দ্রপুর ,কালিদাসপুর ও দামোদর লাগুয়া সমস্ত গ্রামের কমবেশি চলছে অবৈধ কয়লা খনন ও বালি পাচারের কাজ । সাধারণ গ্রামবাসীদের কে অল্প টাকা দিয়ে কয়লা মাফিয়া ও বালি মাফিয়ারা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন এখানকার অমূল্য সম্পদ কয়লা ও বালি । এমন নয় যে এখানকার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতারা কিছুই জানেন না । তারা সব যেন কোনো এক অজানা কারণে চুপ থাকাটাই বাঞ্ছনীয় বলে মনে করেছেন। কয়লা মাফিয়া ও বালি মাফিয়াদের এতটাই সাহস যে তারা কালিদাসপুর এলাকা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকা তে কয়লা ও বালি খননকার্য চালানোর জন্য বড় বড় মেশিন দিয়ে কাজ করছেন।
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সব জেনে কোনো এক অজানা কারণে চুপ আছেন । এলাকাবাসীর চাপের সামনে নতি স্বীকার করে কিছুদিন ধরেই স্থানীয় প্রশাসন তৎপরতা দেখাতে শুরু করেছেন। অবৈধ বালি পাচার রুখতে সেইমতো গতকাল রাত্রে বাঁকুড়া জেলার মেজিয়া থানার ভানোরা গ্রামে অভিযানে যান স্থানীয় বিডিও ও বিএলআরও। অভিযানের শুরুতেই তারা কয়লা ও বালি মাফিয়াদের হাতে আক্রান্ত হন। গতকাল রাত নটা নাগাদ বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লক প্রশাসনের কাছে খবর আসে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দামোদর নদের রামচন্দ্রপুর তেলেন্ডা গ্রাম সংলগ্ন ঘাট থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে একাধিক ট্রাক্টরে করে পাচার করা হচ্ছে । খবর পাওয়ার পরই অবৈধ বালি পাচার রুখতে মেজিয়া ব্লকের বিডিও অনিরুদ্ধ ব্যানার্জী ও বিএলআরও অমিত দাসের নেতৃত্বে অভিযানে যান।
মেজিয়া ব্লকের ভাড়রা গ্রামের কাছে বালি বোঝাই বেশ কয়েকটি ট্রাক্টর আটক করেন বিডিও ও বিএলআরও । এরপরই অবৈধ বালি মাফিয়ার সঙ্গে যুক্ত একদল লোক বিডিও ও বিএলআরও কে ব্যাপক হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। বিডিও ও বিএলআরও কে হেনস্থা করার সময় ট্রাক্টর গুলি পালিয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ ধরে বালি কারবারিদের হাতে ঘেরাও হয়ে থাকার পর অবশেষে মুক্তি পান বিডিও ও বিএলআরও । এই ঘটনা জানাজানি হতেই প্রশাসনের উপর মহল থেকে ব্যাপক চাপ আসে মেজিয়া থানা পুলিশের ওপর, সঙ্গে সঙ্গে মেজিয়া থানা পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের হেনস্থা করা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গতকাল রাতেই বাঁকুড়ার মেজিয়া থানার ডাং মেজিয়া গ্রামের কর্ন মন্ডল ও নাগরডাঙ্গা গ্রামের আশিষ মহান্ত নামের দুজনকে গ্রেফতার করে মেজিয়া থানার পুলিশ। এই ঘটনায় আর কে কে যুক্ত ছিল তা জানার জন্য ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে মেজিয়া থানার পুলিশ । সাধারণ মেজিয়া বাসীর অভিযোগ পুলিশের এই তৎপরতা শুধুমাত্র লোক দেখানো এর আগেও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বহুবার অবৈধ কয়লা ও বালি পাচারের অভিযোগ করল পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।পুলিশের উচ্চপদস্থ জেলার অফিসারেরা এরপর থেকে মেজিয়া থানা এলাকা অবৈধ বালি ও কয়লা পাচারকারীদের ওপর আরও বেশি করে দৃষ্টি রাখবেন বলে জানা গেছে ।