সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ- মায়াপুর ইসকন চন্দ্রোদয় মন্দির থেকে ১ কি.মি দূরে রাজাপুর। সেই রাজাপুরে প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন শ্রীজগন্নাথ, বলরামদেব ও সুভদ্রা মহারানী। রাজাপুরের সেই জগন্নাথের সত্য কাহিনী আজকে আপনাদের বলবো।
১৯৭১ এর বাংলাদেশে যুদ্ধের সময়, ভারতে অনেক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিলো। সেই সময় মন্দিরে পূর্ববর্তী মালিক ফটিক চক্রবর্তীর সাত মেয়ে ছিলো। তিনি সাম্প্রদায়িক সেই পরিস্থিতির মধ্যে সাত মেয়েকে নিয়ে সেখানে বসবাস করা নিরাপদ মনে করলেন না। তিনি রীতিমতো ভয়ে ভীত হয়ে পড়েন, কারণ অনতিদূরেই একটি মুসলিম গ্রাম ছিলো। তাই নিজের মেয়েদের রক্ষা করেতে তিনি তাদের সাথে নিয়ে কটোয়ায় চলে যান। কিন্তু স্থানীয় মুসলমানদের একজন কটোয়ায় গিয়ে তার সাথে দেখা করেন ও বলেন,“ দয়া করে রাজাপুরে ফিরে চলুন।” ফটিক চক্রবর্তী সবিনয়ে এই প্রস্তাব অস্বীকার করলে লোকটি বললেন, “আমরা আপনাকে সর্বতোভাবে রক্ষা করব, চিন্তিত হবেন না।” ফটিকবাবু পুনরায় অস্বীকার করলে সেই লোকটি বললেন, “প্রকৃত কথা হচ্ছে আমরা মন্দির থেকে কন্ঠস্বর ভেসে আসতে শুনছি। তারা বলছে,‘কেউ এখানে আর আসছে না কেন? কেন কেউ আমাদের খেতে দিচ্ছে না।’ আমরা খুব ভীত হয়ে পড়েছি। দয়া করে ফিরে চলুৃন, আমরা আপনাকে ২৪ ঘন্টা পাহারা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”এই ঘটনার কথা শুনে ফটিক চক্রবর্তী আর না করতে পারলেন না। তার ভগবান খিদেয় আছেন একথা তিনি সহ্য করতে পারলেন না। তখন তিনি রাজাপুরে ফিরে আসতে রাজী হন আর গ্রামবাসীরা তার পরিবারকে পূর্ণ সুরক্ষা প্রদান করতে থাকেন।