eaibanglai
Homeএই বাংলায়শেষ হলো বঙ্গীয় প্রাদেশিক জাতীয় ক্রীড়া ও শক্তি সংঘের ৬৮ তম প্রশিক্ষণ...

শেষ হলো বঙ্গীয় প্রাদেশিক জাতীয় ক্রীড়া ও শক্তি সংঘের ৬৮ তম প্রশিক্ষণ শিবির

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,মুর্শিদাবাদঃ- দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী বিপ্লবীদের নৈতিক, মানসিক ও শারীরিক দিক দিয়ে শক্তিশালী করার জন্য পরাধীন ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গীয় প্রাদেশিক জাতীয় ক্রীড়া ও শক্তি সংঘ। বিভিন্ন কারণে মাঝে সাময়িক বিরতি ঘটলেও দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও প্রতিষ্ঠানটি তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়নি। যুব সমাজকে সঠিক দিশা দ্যাখানোর জন্য আজও তারা নিষ্ঠার সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে চলেছে। প্রতিবছর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজন করে সপ্তাহব্যাপী রাজ্য স্তরের ক্রীড়া প্রশিক্ষণ শিবিরের। সংস্থার উদ্যোগে গত ১৭ ই মে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে নগর আজিজা মেমোরিয়াল হাইস্কুলে শুরু হয় ৬৮ তম শিবিরের এবং শেষ হয় গত ২৩ শে মে।

প্রথম দিন রাজ্য সম্পাদিকা তথা ক্যাম্প কমান্ডেন্ট তৃপ্তি প্রামানিকের নেতৃত্বে পরিদর্শন ও বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজের মাধ্যমে উপস্থিত সেনানী, কর্মী ও প্রশিক্ষকদের অভিবাদন গ্রহণ করেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মুর্শিদাবাদ জেলা প্রাইমারি শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান আশীষ মার্জিত। এরপর হয় অতিথিদের বরণ পর্ব।

শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী অশোক দাস, নগর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুদীপ্ত সাউ, অঞ্চল প্রধান রাধেশ্যম ঘোষ, সমাজসেবী শাশ্বত মুখার্জি, রিয়াবুল মোমিন, সামসের আলী মোল্লা, মিরাজুল মোমিন প্রমুখ। তাদের বরণ করে নেন ডেপুটি ক্যাম্প কমান্ডেন্ট মন্দিরা মুখার্জ্জী, সংঘের দুই যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত ও নয়ন ভট্টাচার্য, কোষাধ্যক্ষ বুদ্ধদেব ঘোষ, হিসাব পরীক্ষক শিবনাথ দেবনাথ প্রমুখ।

শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান মন্দিরা মুখার্জ্জী। সুশান্ত বারিকের নেতৃত্ব ভারতীয়মের ছন্দে শিবিরের শিক্ষার্থীদের পেশ করা অপূর্ব কলাকৌশল উপস্থিত অতিথি ও দর্শকদের মুগ্ধ করে। শেষে শিবিরের সংগঠন-সম্পাদক ডা: রেবতী গোস্বামী সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

মোবাইলে আসক্ত শিশু তথা যুবসমাজের শারীরিক, মানসিক ও চারিত্রিক উন্নতির জন্য যেভাবে বঙ্গীয় প্রাদেশিক জাতীয় ক্রীড়া ও শক্তি সংঘ ব্রতী হয়েছে তারজন্য আশিস মার্জিত ও অশোক দাস সংস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

শিবির পরিচালনাকারী সমস্ত কর্মী ও সেনানীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয় দিন থেকে পরবর্তী সাতদিন শিবির চলে নিজস্ব নিয়মে।

বিশ্বজিৎ সেনগুপ্তের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় প্রার্থনা সভা যার মূলসুর ছিল – সবচেয়ে বড় ইস্টদেবতা হলেন মা-বাবা। সুতরাং সবচেয়ে আগে তাঁদের সম্মান জানাতে হবে।

পিটি ইন্সট্রাক্টর সংঘের সেনানী বুদ্ধদেব ঘোষের নেতৃত্বে শুরু হয় পিটি। পরে হাল্কা প্যারেড অনুশীলন এবং শেষে নিজ নিজ বিষয়ের স্পেশাল ট্রেনিং।

আবুল সেখ ও লুৎফা বেগমের তত্ত্বাবধানে অ্যাথলেটিক, অনুপ দে খো খো, রেবতী গোস্বামী ও বুদ্ধদেব ঘোষ যোগব্যায়াম, সুশান্ত বারিক লোকনৃত্য, কুন্তল ঘোষাল ও সমীর দাস ব্রতচারী, অরূপ প্রামানিক ও মুকুল দাস স্পেশ্যাল প্যারেড, দীপ্তি সর্দার ধারা ও নিমুদ্দিন শেখ টেনিকয়েট, সুরাবুদ্দিন খাঁ ট্রাফিক কন্ট্রোল, মল্লিকা দাস জিমন্যাস্টিক, মধুরিমা বেরা কবাডি, পলাশ তরফদার থ্রোবল, এবং অজিত দাস ক্যারাটে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেন।

শুধু তাই নয় একজন আহত মানুষের কিভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করা হবে সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেন তৃপ্তি প্রামানিক। দুপুরে দেশাত্মবোধক গানের ক্লাস নেন মন্দিরা মুখার্জি। মিলি বাগচী, রিতা ভূইঞা ও সুশান্ত বারিক নেন ভারতীয়মের ক্লাস। গান, আবৃত্তি ও নাচের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মেতে ওঠে নৈশ মজলিসে।

জানা যাচ্ছে দুই ২৪ পরগণা, হুগলী, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, বাঁকুড়া, কলকাতা থেকে প্রায় ৪০০ জন শিক্ষার্থী এই শিবিরে অংশগ্রহণ করে।

মন্দিরা দেবী বললেন – মোবাইল ফোনে বুঁদ ছেলেমেয়েদের খেলার মাঠমুখী করার জন্য এই ক্রীড়া প্রশিক্ষণ শিবির আয়োজন করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক বিকাশ‌ও ছিল এই প্রশিক্ষণ শিবিরের অন্যতম লক্ষ্য। তিনি আরও বললেন – আগামীদিনে অন্যান্য জেলাতেও এই শিবিরের আয়োজন করা হবে।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments