সংবাদদাতা, আসানসোলঃ- আসানসোলে হোটেলের রুমে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হওয়া যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হলো এক যুবতীকে। ঘটনার ৪ দিন পরে সাবানা পরভীন ওরফে জয়নাভ খাতুন নামে ঐ যুবতী মৃত যুবকের সঙ্গিনীকে শনিবার রাতে আসানসোল দক্ষিণ থানা পিপি গ্রেফতার করে বলে জানা গেছে। ঐ যুবতীর বাড়ি আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের আকনবাগানে। রবিবার ধৃতকে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আসানসোল আদালতে তোলা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক তার জামিন নাকচ করে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন। নিয়ামতপুরের চক্রবর্তী পাড়ার বাসিন্দা বছর ২১ এর যুবক রোহন প্রসাদ রামের বাবা সীতারাম প্রসাদ রাম ছেলের মৃতদেহ উদ্ধারের পরে এই যুবতীর নামে খুনের অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ধৃতর বিরুদ্ধে একটি খুনের মামলা করেছে।
প্রসঙ্গতঃ, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে আসানসোলের জিটি রোডের কুমারপুরে মনোজ সিনেমা হল সংলগ্ন একটি হোটেলের রুম থেকে কুলটি কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া রোহন প্রসাদ রাম (২১) নামে ঐ যুবকের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। তার কপালের ঠিক মাঝখানে একটা ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ রোহন প্রসাদ রাম গ্রেফতার হওয়া যুবতীকে নিয়ে আসানসোলের এই হোটেলে ৩০৬ নং রুমে এসেছিলো। পরের দিন দুপুরের পরে দরজা ভেঙে ঐ রুম থেকে রোহনের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহ উদ্ধারের পরে পুলিশ ঐ যুবতীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলো। তিনি পুলিশকে জানান, সোমবার রাত নটা নাগাদ হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। তার দাবি সত্যতা যাচাই করতে পুলিশ হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে।
বুধবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে যুবকের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। তাতে একটি রিভলভারের গুলি যুবকের মাথার পেছন থেকে পাওয়া যায়। সেইগুলি পুলিশ জেলা হাসপাতালের মর্গ থেকে সিজ করেছিলো। হোটেলের রুম থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করার সময় যুবকের কাছ থেকে একটি রিভলভারও পায়। সেটিকেও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই রিভলভার ও গুলির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয় । পরে বিকেল সাড়ে চারটে থেকে দেহ নিয়ে সঠিক বিচারের দাবিতে কুলটি থানার নিয়ামতপুরে জিটি রোড অবরোধ করেছিলেন যুবকের পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী ও এলাকার বাসিন্দারা।
আসানসোলের এই গুলিকান্ডে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশকে তদন্তে সাহায্য করে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিডি বা গোয়েন্দা দপ্তর। বুধবার বিকেলে ঐ হোটেলে আসেন দূর্গাপুরের ফরেনসিক ( আরএফএসএল) টিমের সদস্যরা। তারা এই ঘটনার তদন্তে থাকা পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে রুমের সবকিছু পরীক্ষা করে দেখেন। ঐ রুম থেকে খোঁজ মেলে একটি হ্যান্ডব্যাগের । যার মধ্যে থেকে পাওয়া যায় রোহনের মোবাইল ফোন। এই প্রসঙ্গে এক আধিকারিক বলেন, “মৃত যুবকের বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এই যুবতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে খুনের মামলা করা হয়েছে। এই ঘটনার পেছনে সম্পর্কের টানাপোড়েন না অন্য কিছু আছে তা, ধৃতকে জেরা করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।”