eaibanglai
Homeএই বাংলায়দুর্গাপুর ইস্কনে সাধুদের অপমানের বদলা নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে

দুর্গাপুর ইস্কনে সাধুদের অপমানের বদলা নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে

নিজস্ব প্রতিনিধি, দুর্গাপুরঃ গত ২রা ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুরের নেহেরু স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভার পর কেটে গেছে প্রায় একটা মাস। দেশের প্রধানমন্ত্রীর দুর্গাপুর সফর যেমন দুর্গাপুর শহরের আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছিল ঠিক তেমনি প্রধানমন্ত্রীর সভার পর দুর্গাপুর ইস্কন মন্দির ও ইস্কন মন্দিরের সাধু-সন্তদের নিয়েও বিস্তর আলোচনা হয়েছিল। সৌজন্যে ২রা ফেব্রুয়ারি বিজেপির রাজনৈতিক জনসভায় ইস্কন মন্দিরের সাধু-সন্তদের যোগদান। সেইদিন ইস্কন সাধুদের প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দেওয়া নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল গোটা দুর্গাপুর জুড়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের তরফেও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইস্কন সাধুদের বিরুদ্ধে নানাধরণের কুরুচিকর মন্তব্য শুরু হয়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, রাজ্যে ক্ষ্মতাসীন রাজনৈতিক দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নানান কুরুচিকর মন্তব্য করে বসেন ইস্কন সাধুদের উদ্দেশ্যে। একপ্রকার পরিস্থিতির চাপে পড়েই চারদিনের মাথায় দুর্গাপুর ইস্কন মন্দির ও তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি উত্তম মুখার্জীর তরফে তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয় দুর্গাপুর ইস্কন মন্দিরে। আমাদের মনে হয়েছিল সেই বৈঠকে কোনও এক অজানা চাপে পড়েই ইস্কন মন্দিরের সাধু-সন্ন্যাসীরা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হন, গত ২রা ফেব্রুয়ারি বিজেপির রাজনৈতিক জনসভায় যোগ দেওয়া তাদের ভুল হয়েছিল। তাঁরা জানান, শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কাছ থেকে দেখার আবেগ এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতে ভগবদগীতা তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই সেইদিনের সভায় তাঁরা উপস্থিত হয়েছিলেন। ইস্কন মন্দিরের তরফে দোষ স্বীকার করে নিলেও ঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। এরপর থেকেই শুরু হয়ে যায় বিজেপি জেলা কর্মকর্তাদের মধ্যে ইস্কন মন্দিরের সাধুদের পাশে দাঁড়িয়ে সমবেদনা জানানোর পালা। তাঁদের অপমানের প্রতিবাদ করতে ছুটে গিয়েছিলেন বিজেপির প্রতিনিধি দল দুর্গাপুর ইস্কন মন্দিরে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে ইস্কন মন্দিরের সাধু-সন্তদের হেনস্থার খবর রাজ্য বিজেপির তরফে দিল্লীতে বিজেপি দফতর তথা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে (PMO) অফিসেও পৌঁছায়। সেই ঘটনার পাল্টা সুদে-আসলে বিরোধী দলগুলিকে এবার ফিরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে পাশে দাঁড়ালেন দুর্গাপুর ইস্কন মন্দিরের সেইসমস্ত সাধুদের, যাদের বিজেপির জনসভায় যোগ দেওয়ার জন্য হেনস্থা হতে হয়েছিল বিরোধী দলের হাতে। গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, আর পাঁচজন সাধারণ নাগরিকের মতো দিল্লির মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রোয় চেপে দক্ষিণ দিল্লির ইস্কন মন্দিরে পৌঁছান তিনি। সেখানে ইস্কন মন্দিরের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিশ্বের সবথেকে বড় ৮০০ কেজি ওজন ও ৬৭০ পাতার বিশালাকায় ভাগবদ গীতার উন্মোচন করেন তিনি। যা গত ২রা ফেব্রুয়ারির পর থেকে দুর্গাপুরের ইস্কন মন্দিরের সাধু-সন্তদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে এক কড়া বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। দিল্লিতে ইস্কন মন্দিরের অনুষ্ঠানে দেশের একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে যোগদান করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন সমস্ত কিছুর উর্ধে আমরা ভারতীয় নাগরিক। স্বাধীন গণতান্ত্রিক এই দেশের প্রত্যেক মানুষের সমান এবং নিজ নিজ মতপ্রকাশ ও যেকোনো জায়গায় যাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং সেই অধিকারকে সকলের সম্মান জানানো উচিত। রাজনৈতিক মাপকাঠি দিয়ে সেই অধিকারকে কখনোই ওজন করা যায় না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওইদিনের ইস্কন মন্দিরের উপস্থিত থাকা ও সাধু-সন্ন্যাসীদের সঙ্গে সহজেই মিশে যাওয়া আরেকবার প্রমাণ করলো জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সকলেই এক, আমাদের একটাই পরিচয় ভারতবাসী।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments