eaibanglai
Homeএই বাংলায়ঝা হত্যায় গ্রেপ্তার আরো একঃ নারায়ণ খড়কা কি তবে সত্যিই এলাকা ছেড়ে...

ঝা হত্যায় গ্রেপ্তার আরো একঃ নারায়ণ খড়কা কি তবে সত্যিই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেন ?

মনোজ সিংহ, দুর্গাপুর:- রাজু ঝা হত্যায় এক পরিবহণ সংস্থার সাইট সুপারভাইজার অভিজিৎ মন্ডলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই অভিজিৎ কে ১৬০ সি.আর.পি.সি ধারায় রাজু খুনের ৮ দিনের মাথায় অন্যান্য অনেকের পাশাপাশি টানা জেরা করে তখনকার মতো ছেড়ে দেয় খুনের তদন্তের দায়িত্বে থাকা ১২ সদস্যের সিট। কিন্তু ঘটনার ১৯ দিন পর সেই অভিজিৎকেই দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অম্বুজা কলোনি থেকে গ্রেফতার করল সিট। সিটের দাবি, ‘অভিযুক্তের বয়ানে সন্দেহজনক গরমিল থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’ পূর্ব বর্ধমানের জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিষ সেন বলেন, “আমাদের তদন্তকারীরা তাকে লাগাতার জেরা করছেন। আমরা রাজু খুনে অভিজিতের ঠিক কি ভূমিকা ছিল, তা বোঝার চেষ্টা করছি।”

অভিজিৎ দুর্গাপুরের আরেক কয়লা মাফিয়া ও পরিবহণ ব্যবসায়ী নারায়ণ খড়কার গাড়ির চালক হিসেবে সংস্থায় ঢুকলেও, ধীরে ধীরে সে হয়ে ওঠে নারায়ণের অতি বিশ্বস্ত অনুচর। তাহলে কি রাজু ঝা হত্যায় নারায়ণের যোগসাজশের গন্ধ পাচ্ছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার নারায়ণকেও ১৬০ সি.আর.পি.সি ধারায় জেরা করার জন্য একটি নোটিশ পাঠায় সিট। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত জানা গেছে, নারায়ণ তখনো সিটের সামনে হাজিরই হয়নি।

এদিকে, শুক্রবার রাতেই সিট তাহেরুল আলম কাদরী নামের নারায়নের এক বাউন্সারকে গ্রেপ্তার করে বলে জানা গেছে । এই তাহেরুল আর নারায়নের অফিসের এক পাচক রবি বেহেরাকে অভিজিত্কে গ্রেপ্তারের সময় আটক করেছিল। বুধবারই দুজনকেই জিজ্ঞাসাবাদের পর গলসী থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল ।

সিটের তদন্তকারীরা অম্বুজা কলোনিতে বুধবার রাতে নারায়ণের অফিসটি সিল করার সময় জানান, “নারায়ণ এতদিন এই দুর্গাপুরেই ছিল। অভিজিৎকে আমরা হেফাজতে নিতেই সে গা ঢাকা দেয়। ওর কোনো মোবাইল ফোনেরই টাওয়ার লোকেশন পাওয়া যাচ্ছে না।” তাহলে নারায়ণ কোথায় ? তার হঠাৎ গা ঢাকা দেওয়ার প্রয়োজনটাই বা কেন পড়ল ?

রাজু ঝা হত্যার কয়েকদিন পর রাজুর সাথে তার পুরনো রেষারেষি প্রসঙ্গ টেনে পুলিশ সহ কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ও তথ্যাভিজ্ঞ মহলের কেউ কেউ তার যোগসাজসের বিষয়টি চর্চায় আনার পর নারায়ণ একটি লিখিত বায়ানে তার আইনজীবী সূর্যনীল দাস মারফত জানান, “ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ কেউ আমার নাম এই ঘটনার সাথে জুড়ে আমাকে অযথা হেনস্থা করতে চাইছেন। সমাজ মাধ্যমে আমার মতো একজন শিক্ষিত ব্যবসায়ীর নামে কাদা ছেটানোর চেষ্টা করছেন।” তার আরো দাবি, “আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু, রাজু হত্যায় অনেকের মতো আমি নিজেও মর্মাহত।” যে নারায়ণ আইনজীবীর মারফত তার মর্মাহত হওয়ার দাবি করছেন, তিনিই কি তাহলে আসল নাটের গুরু ? এও কি সম্ভব ?

বর্ধমান পুলিশের তদন্তকারী এক আধিকারিকের অবশ্য স্পষ্ট দাবি, “এসবই নাটক। সব অপরাধীই তো নিজেকে নির্দোষ বলে। সেটা কি মানা যায়? তাহলে, এসব তদন্তের প্রয়োজনটাই বা কি ?” তার আরো যুক্তি, “অতই যদি নির্দোষ, তাহলে সমন পাঠানোর পরও হাজির হচ্ছেনা কেন? কিসের এত ভয় ? পালিয়েই বা গেল কেন ?”

নারায়ণ খড়কা কি তবে সত্যি সত্যি পলাতক ? দীর্ঘদিনের নারায়ণের সাথে কাজ করা প্রাক্তন এক কয়লা কারবারীর মতে, “আমার তো মনে হয় না পালিয়েছে কোথাও। পালিয়ে কি পুলিশের হাত থেকে বাঁচা যায় ? আর আমার এটাও ধারণা কোথাও ঘাপটি মেরে আছে। পরিস্থিতির জল মাপছে।”

নারায়ণের হদিস যেমন পুলিশ পায়নি, তেমনই তার টিকি খুঁজে পাচ্ছে না তার একসময়ের শাগরেদরা। তারা এও জানায়, “ওর মোবাইল ফোনও বন্ধ।”

পুলিশ ইতিমধ্যেই বর্ধমান আদালত থেকে নারায়ণের সমস্ত অফিস ও বাসস্থানে তদন্ত ও অনুসন্ধান চালানোর অনুমতি হাতে পেয়ে গেছে,‌ বলে আদালতের একটি সূত্র জানায়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments