নিজস্ব প্রতিনিধি, এই বাংলায়ঃ ফের অমানবিকতার নজির হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। মুমূর্ষু রোগীকে লাথি মেরে, টেনে-হিচড়ে ওয়ার্ড থেকে হাসপাতালের বাইরে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠল হাসপাতালেরই এক অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। হাসপাতালে আসা অন্যান্য রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তি হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে ভর্তি ছিল। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এতটাই অমানবিক যে ওই মুমুর্ষু রোগীকে হাসপাতাল থেকে মারতে মারতে টেনে-হেচড়ে বাইরে বার করে তার গায়ে বালতি বালতি জল ঢেলে দিয়েছে। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করার পাশপাশি ক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতাল কর্মীদের উপর চড়াও হতে গেলে তড়িঘড়ি হাসপাতালের প্রধান গেটে তালা মেরে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার চরম নিন্দা করে এক রোগীর আত্মীয় জানান, হতে পারে ওই রোগী মানসিক ভারসাম্যহীন, কিন্তু সে তো রোগী, প্রয়োজনে ওই রোগীর পরিবারকে ফোন করে ডাকতে পারত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কিন্তু তা না করে একজন রোগীকে এরকম অমানবিকভাবে মারধর করে তাকে হাসপাতালের বাইরে ফেলে রেখে গায়ে জল ঢেলে দেওয়ার ঘটনা ভয়াবহ অপরাধ। এই অপরাধের চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু এইধরনের ঘটনা রাজ্যে প্রথম নয়, এর আগেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বার বার রোগীর সঙ্গে অভব্য ও অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করে মাল্টি স্পেশানিটি হাসপাতাল, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর আধুনিকীকরন, সুলভ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সহ একাধিক জনকল্যাণ মূলক কাজ করছেন সেখানে হাসপাতালের কর্মীদের এধরনের মানসিকতা মেনে নেওয়া যায় না। আসলে এই ঘটনার পর আরও একবার প্রমাণ হল, ওই রোগী মানসিক ভারসাম্যহীন নয়, বাস্তবে হাসপাতালের ওই সমস্ত কর্মীরাই মানসিক ভারসাম্যহীন যারা একজন রোগীর সঙ্গে এইধরনের অমানবিক ব্যবহার করে চলেছে। তাই সবার আগে হাসপাতালের পরিকাঠামো নয় প্রয়োজন হাসপাতালের কর্মীদের মানসিক পরীক্ষা করা। আদৌ কী রাজ্যের সরকারী হাসপাতালগুলিতে কর্মরত ওই সমস্ত অভিযুক্ত কর্মীরা মানুষের সেবা করার জন্য মানসিকভাবে সুস্থ, নাকি তারই মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন তা আগে যাচাই করা অবশাম্ভাবী। কারণ, তাদের হাতেই তো কোনও রোগীর বাঁচা কিংবা না বেঁচে থাকা নির্ভর করে। এইসমস্ত মানসিক ভারসাম্যহীন হাসপাতাল কর্মীর হাতে কোনও রোগীই সুরক্ষিত নয়।