নীহারিকা মুখার্জ্জী চ্যাটার্জ্জী, ফলতা, দক্ষিণ ২৪-পরগণা-: পড়াশোনা থেকে শুরু করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের সৌন্দর্যায়ন, মনীষীদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ের মধ্যে জন্মদিন পালন, ইলিশ উৎসব ও খাদ্য উৎসবের আয়োজন, সচেতনমূলক শিবির, শারীরিক ও নৈতিক শিক্ষার জন্য ব্রতচারীর আয়োজন, শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন – প্রায় সবকিছুতেই দীর্ঘদিন ধরে অনন্য নজির স্থাপন করে চলেছে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না।
যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তির মাধ্যমে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে পালিত হয় ‘শিক্ষক দিবস’। জাতীয় শিক্ষক ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ও পুষ্পদান করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর সহ অন্যান্য শিক্ষকরা এবং ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। পরে প্রধান শিক্ষক আজকের দিনের তাৎপর্য সবার সামনে তুলে ধরেন।
গরীব ঘরের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের কাছে জন্মদিন পালন নিছক বিলাসিতা ছাড়া কিছু নয়। তারা শুধু অবাক বিস্ময়ে সমবয়সী ধনী বাড়ির ছেলেমেয়েদের জন্মদিন পালন করা দেখত ও দীর্ঘশ্বাস ফেলত। কিন্তু বিদ্যালয়ের সৌজন্যে তাদের সেই আক্ষেপ দূর হয়। যেসব শিক্ষার্থীর আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে জন্ম বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছোট্ট উৎসবের মধ্যে দিয়ে তাদের জন্মদিন পালন করা হয় এবং হাতে তুলে দেওয়া হয় উপহার। সেইসময় ক্ষুদেদের মুখের হাসি চারদিকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয়।
বাঙালি মানেই খাদ্যরসিক। পাতে এক টুকরো মাছ, বিশেষ করে ইলিশ, পড়লে তার আনন্দের সীমা থাকেনা। কিন্তু ইলিশের অস্বাভাবিক মূল্য গরীব ঘরের শিক্ষার্থীদের কাছে ‘আকাশ কুসুম কল্পনা’। ইলিশ মাছের রকমারি পদ নিয়ে তাদের পাশে এবারও দাঁড়িয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাদের জন্য আয়োজন করে ইলিশ উৎসবের। অন্যান্য পদের সঙ্গে গরম ভাতের পাতে তুলে দেওয়া হয় ইলিশ মাছের তেল, ইলিশ মাছ ভাজা ও ইলিশ মাছ ভাপা।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য উপস্থিত ছিলেন নাক, কান ও গলার বিখ্যাত চিকিৎসক ডাঃ কৌশিক কুমার গায়েন।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ফলতা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সানু বক্সি, ফলতা পশ্চিম চক্র ও ফলতা চক্রের সদস্য সহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অভিভাবক।
অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিডিওর ছোট্ট প্রতিক্রিয়া – এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুবই সৌভাগ্যবান।
তিলক বাবু বলেন, শিক্ষক দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি আমরা ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জন্মদিন পালন করেছি। তাদের জন্য ইলিশ উৎসব ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার আয়োজন করেছি। আমাদের লক্ষ্য পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে তাদের মানসিক দিক দিয়ে উৎফুল্ল রাখা। সবমিলিয়ে একটি সুন্দর দিন আমরা উপভোগ করলাম।