জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাঃ– পাঠদান থেকে শুরু করে সৌন্দর্যায়ন – সব ক্ষেত্রেই বিশেষত্বের পরিচয় দিয়ে চলেছে জগদীশ চন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সৌজন্যে বিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষক-শিক্ষিকা। ব্যতিক্রম ঘটলনা সাতাত্তর-তম স্বাধীনতা দিবস পালনের ক্ষেত্রেও। সেখানেও দেখা গেল নতুনত্ব।
স্বাধীনতার পূর্ব দিনেই আলোর মালায় সেজে ওঠে বিদ্যালয়টি। স্বাধীনতার দিন সকাল থেকেই সাজ সাজ রব। ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে দেখা যায় চরম ব্যস্ততা। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে একটু পরেই বের হবে প্রভাতফেরি। সেখানে দেখা গেল সুভাষচন্দ্র বসু, মাতঙ্গীনি হাজরা, ভগৎ সিংহ, প্রীতিলতা ওয়েদ্দার সহ বিভিন্ন বিপ্লবীদের সজ্জায় সজ্জিত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বিদ্যালয়ের চার শতাধিক কচিকাচা হেঁটে চলেছে। একে একে উত্তর ও দক্ষিণ বসুলাট, জফরপুর, জালালপুর, বেলেশ্বর, ফলতা ফোর্ট প্রভৃতি এলাকা অতিক্রম করে সেটি এসে পৌঁছায় ফলতা বাসস্ট্যাণ্ডে।
সেখানে দেশাত্মবোধক সঙ্গীতের মাধ্যমে নৃত্য পরিবেশন করে বিদ্যালয়ের কচিকাচারা। তাদের যাওয়ার পথে গ্রামবাসীরা যেমন রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে যায় তেমনি মুহূর্তের মধ্যে ভিড় জমে যায় কর্মব্যস্ত বাসস্ট্যাণ্ডে। সেখান থেকে তারা ফিরে আসে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। সেখানে আর একদফা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। আজকের দিনটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ উপস্থিত অতিথিরা।
অন্যান্যদের সঙ্গে প্রভাতফেরিতে পা মেলান স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর কুমার নস্কর, তৃণমূল ব্লক সভাপতি সঞ্চিতা মণ্ডল, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ আতিকুল্লা মোল্লা, অসংখ্য অভিভাবক সহ শিক্ষক-শিক্ষিকা লিপিকা করণ, ধরিত্রী পুরকাইত, সবিতা মিস্ত্রী, মণিশ চক্রবর্তী, শুভাশিস হালদার, কুন্তল মণ্ডল, মৌসুমী প্রামাণিক ও প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর।
শঙ্কর বাবু বলেই ফেললেন – এইসব কচিকাচাদের সঙ্গে হাঁটতে গিয়ে মুহূর্তের জন্য নিজের শৈশব জীবনে ফিরে গিয়েছিলাম। তাই মাঝপথ থেকে ফিরে আসতে পারিনি।
এর আগে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে উপস্থিত ছাত্রছাত্রী সহ অন্যান্যদের জয়ধ্বনির মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর কুমার নস্কর। একইসঙ্গে বিভিন্ন মনীষীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়।
ফলতা সার্কেলের এস.আই (শিক্ষা) পিয়ালী বড়ুয়া বললেন- ফলতা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সত্যিই আমাদের গর্ব। এর উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে জানাই কুর্ণিশ।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিলক নস্কর বললেন – চার শতাধিক ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে প্রভাতফেরি পরিচালনা করা কষ্টকর হলেও বিদ্যালয়ের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এবং প্রতিটি অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিষয়টি সহজ হয়েছে। আশাকরি পরবর্তী প্রজন্ম একে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দেবে ।