নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- দুর্গাপুর শহরকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করতে সবরকম প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে নগর প্রশাসন। রাস্তায় রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা, ঝাঁ-চকচকে পিচের রাস্তা, রাস্তার দু’ধারে বাগান, বাচ্চাদের জন্য খেলার পার্ক, স্টেডিয়াম তথা আন্তর্জাতিক মানের প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হয়েছে দুর্গাপুর শহর জুড়ে। দুর্গাপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে আলোর স্তম্ভগুলিতে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে নীল সাদা রংইয়ের ছোট ছোট টুনি বাল্ব। দুর্গাপুর পৌরসভার সমস্ত ওয়ার্ডগুলিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে যাতে আগামী দিনে দুর্গাপুর একটি স্মার্ট সিটিতে পরিবর্তন হতে পারে। ইতিমধ্যেই সারাদেশের মধ্যে দুর্গাপুর রেলওয়ে স্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানের রেলওয়ে স্টেশন করে তোলা হয়েছে। কিন্তু কথায় আছে ‘প্রদীপের তলায় অন্ধকার’। দুর্গাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিটি সেন্টার আসতে গেলে ডিভিসি মোড় পার হলেই রাস্তার ধারে নজরে পড়বে শুয়োর চাষের খোঁয়াড়গুলি। রাস্তার একদিকে যেমন সরকারি সার্কিট হাউস, মহকুমাশাসকের আবাসন, গড়ে উঠেছে এনার্জি পার্ক তথা তৈরি হয়েছে ঝাঁ-চকচকে রাজ্য অতিথিশালাও। কিন্তু, এত কিছুর মধ্যে ছাপিয়ে গিয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা শাসকের সরকারি আবাসনের উল্টোদিকের জায়গাটি, যেখানে চলছে শুয়োর চাষ রয়েছে শুয়ারের আঁখড়াও। সারা পৃথিবী জুড়ে যখন করোনা ভাইরাসের দাপট বেড়েই চলেছে তখন দুর্গাপুর শহরে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই থাকতে হচ্ছে মহকুমা শাসককে। শহরের প্রবেশ করার মূল রাস্তা ক্ষুদিরাম সরণি ধরে সিটিসেন্টার যাওয়ার পথে নজরে আসবে এই অস্বাস্থ্যকর শুয়োর চাষের আঁখড়াগুলি। দু’দিন আগে রাজ্য সরকার একটি সার্কিট হাউস তৈরি করেছেন ওই রাস্তার উপরে, শুধু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে সেই সার্কিট হাউসটি। জানা গেছে বাম আমলে এখানে ভেষজ উদ্যান তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা ফলশ্রুতি হয়নি। বর্তমানে সেই জায়গাতেই এখন তৈরি হয়েছে শুয়োর চাষের খোঁয়াড়। পুলিশ তথা পৌরসভার পক্ষ থেকে অনেকবার ভেঙে দেওয়া হলেও ফের গড়ে ওঠে শুয়োরের খোঁয়াড়। বেশ কিছুদিন আগে এই সবুজ এলাকাটিকে রক্ষা করার জন্য চারিপাশে তারের বেড়া দেওয়া হয়েছিল এডিডিএর পক্ষ থেকে, কিন্তু কে বা কারা সেই কনক্রিটের বেড়া পিলারসহ চুরি করে নিয়ে গেছে। স্বভাবতই দুর্গাপুর শহরে প্রবেশের অন্যতম জায়গা ডিভিসি মোড় থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টার আসার রাস্তায় এইরকম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখে নাক সিঁটকেছেন অনেকেই। সূত্র থেকে জানা যায় দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসন, পুরসভা ও এডিডিএ এর যৌথভাবে ওই জায়গাটিতে একটি পার্ক করার জন্য অনুমোদন নিয়েছেন। পার্ক তৈরি করতে একটি প্রোজেক্ট নেওয়া হয়েছে যা আনুমানিক ২০ কোটি টাকার। প্রথম পর্যায় ৯ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে এবং দ্বিতীয় পর্যায় ১১ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। ছোট ছোট জলাশয়, বসার জায়গা ও চারিপাশে সকালবেলায় জগিং পাথও তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে। পার্কটিকে সাজিয়ে তুলে সেখানে ৮ থেকে ৮০ সকলের ব্যাবহার যোগ্য করে তোলা হবে। এবার দেখার বিষয় এইসব অনুমোদন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত কখন হয়।