সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- সম্প্রতি সবজি ও আলুর চড়া দাম মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যবাসীর কাছে। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পর প্রশাসনিক তৎপরতায় অন্য আনাজের দাম কমলেও আলুর দামে বিশেষ হেরফের হয়নি। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়েছে আলুর দাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের নির্দেশ দেন রাজ্যের চাহিদা পূরণ ও দাম নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত ভিনরাজ্যে আলু রপ্তানি চলবে না। ফলে রপ্তানি বন্ধে কড়া নজর রাখতে বিভিন্ন সীমানায় কড়া পাহারা বসেছে। পূর্ব বর্ধমান থেকে বিহারগামী আলুবোঝাই ট্রাক আসানসোলের বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার ডুবুরডিহি চেকপোষ্টে আটকে দিয়েছে পুলিশ। ফলে গত তিনদিন ধরে সীমান্তে আটকে রয়েছে বেশ কিছু আলুর ট্রাক। যা নিয়ে ঘোর আপত্তি আলু ব্যবসায়ীদের। প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। যার জেরে আবার বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জোগান না বাড়লে অগ্নিমূল্য হতে পারে আলু। রবিবার এমনিতেই হিমঘর বন্ধ থাকে। কিন্তু সোমবার বিভিন্ন জায়গায় হিমঘর খোলা হলেও, কর্মবিরতির কারণে আলু বার করা হয়নি। গত শনিবার হিমঘর থেকে যে পরিমাণ আলু বার করা হয়েছিল, তা-ও বাজারে প্রায় শেষের দিকে। এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা, খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে যা আলু মজুত আছে, তা তারা দাম বাড়িয়েই বিক্রি করবেন। গত কয়েক দিন ধরেই হুগলি, বর্ধমানের খোলা বাজারে জ্যোতি আলু কেজিতে ৩২-৩৩ টাকা ও চন্দ্রমুখী আলু কেজিতে ৩৮-৪০ টাকার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। দাম আরও বাড়লে তা আর সাধারণের সাধ্যের মধ্যে থাকবে না বলেই মনে করছেন ক্রেতারা। আলু ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, পাইকারি বাজারে দাম ঠিকই থাকছে। কিন্তু খুচরো বাজারে গিয়ে তা বেড়ে যাচ্ছে। এক শ্রেণির আড়তদার অতিরিক্ত মুনাফা লুটছেন বলেই আলুর দাম সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, এবার আলু চাষের মরশুমে বৃষ্টি হয়। যার ফলে প্রথম দফার ফলন নষ্ট হয়ে যায়। দ্বিতীয়বার চাষের সময় ফলন কম হয়েছে। ফলে জোগানে ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট ঘোষণা করায় বাজারে জোগানে টান পড়তে পারে। মঙ্গলবার থেকেই বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। অন্যদিকে রাজ্য সরকার ‘সুফল বাংলা’ স্টলের মাধ্যমে আলু বিক্রি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে।