সংবাদদাতা, আসানসোল:- সালানপুর ব্লকে রেশন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে ফের উঠল গুরুতর প্রশ্ন। সরকারি রেশন ব্যবস্থায় বিতরণ করা আটার গুণমান নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে—যেখানে অভিযোগকারীদের দাবি, আটা নয়, যেন বালি ও কীটপতঙ্গের মিশ্রণ! খাদ্যসামগ্রীতে এমন নিম্নমানের উপাদান থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ ছড়িয়েছে।গত মার্চ মাসে সালানপুর ব্লকের একাধিক এলাকা থেকে খাদ্য ও সরবরাহ দফতরে অভিযোগ দায়ের করা হয় যে, রেশন আটার মধ্যে বালি ও পোকামাকড় রয়েছে। কিন্তু তদন্ত প্রক্রিয়া ঘিরে উঠেছে গুরুতর অভিযোগ। অভিযোগকারীদের দাবি, নমুনা সংগ্রহের সময় উপভোক্তাদের সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে শুধুমাত্র ডিলারের কাছ থেকেই নমুনা নেওয়া হয়েছে। এর পর সেই নমুনা পরীক্ষায় ‘উত্তীর্ণ’ বলে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, যা জনগণের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা এবং অভিযোগকারী অমরনাথ মাহাতো বলেন, “এই তথাকথিত তদন্ত আসলে এক প্রহসন। ডিলার, মিল মালিক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে আঁতাতেই সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। যদি সত্যিই আটা ভালো হয়, তাহলে পরীক্ষার জন্য নমুনা গ্রাহকদের বাড়ি থেকে কেন নেওয়া হল না? ডিলারের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা কি নিরপেক্ষ বলা যায়?”তিনি আরও বলেন, “যাঁরা ল্যাবে এই আটাকে ‘পাস’ করেছেন, তাঁরা একবার এই আটা দিয়ে রুটি বানিয়ে খেয়ে দেখুন। তখন বোঝা যাবে এর গুণমান। গরিবের জন্য কি এমনই নোংরা খাবার বরাদ্দ ?”
অভিযোগকারীরা দাবি করছেন, এই তদন্ত প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয় এবং তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিচালিত হয়েছে। খাদ্য দফতরের তরফে অভিযোগ বন্ধ বলে জানানো হলেও, সাধারণ মানুষ তা মানতে রাজি নন। তাঁদের অভিযোগ, নমুনা বদল করে রিপোর্টে আটা ঠিক দেখিয়ে পুরো বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
ডিলারদের দাবি, তাঁরা কেবলমাত্র মিল থেকে প্রাপ্ত প্যাকেটজাত আটা সরবরাহ করেন। কিন্তু সেই আটা এতটাই নিম্নমানের যে অনেকেই তা গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন। বহু গ্রাহক এই আটা ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সালানপুরের বিডিও অফিসও আটার গুণগত সমস্যা থাকা আংশিকভাবে স্বীকার করেছে। তবে তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে উঠছে প্রশ্ন—নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার অভাব স্পষ্ট। সাধারণ মানুষের দাবি, ভবিষ্যতে নমুনা অবশ্যই উপভোক্তাদের উপস্থিতিতে সংগ্রহ করতে হবে।
এই রেশন কেলেঙ্কারি রাজ্যজুড়ে রেশন ব্যবস্থার জবাবদিহিতার অভাব এবং অনিয়মকে সামনে নিয়ে এসেছে। অভিযোগকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই প্রতারণার বিরুদ্ধে তাঁরা আরও কঠোর গণআন্দোলনে নামবেন। তাঁদের বক্তব্য, “গরিবের মুখের খাবার নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলছে, তাদের আমরা রেহাই দেব না।






