আনোয়ার আলী, মেমারি, পূর্ব বর্ধমান -: একদল ধান্দাবাজ রাজনৈতিক নেতাদের সৌজন্যে জাতপাত ও ধর্মীয় বিদ্বেষের কালোমেঘ দেশের আকাশকে যখন ঘিরে ফেলে তখন তাতে ‘কীসের কুসুম’ বলে ইন্ধন দিতে এগিয়ে আসে মূল স্রোতের সাংবাদিকদের একাংশ। ধর্মের ঊর্ধ্বে যে মানবতা, রবীন্দ্র-নজরুলের সম্প্রীতির বাংলায় তারই সাক্ষী থাকার সুযোগ পেলেন মেমারিবাসী।
মশাগ্রাম রেল স্টেশনে দীর্ঘ সময় ধরে একজন ভবঘুরে বৃদ্ধা বিনা চিকিৎসায় জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়েছিলেন। খবর পেয়েই সেখানে পৌঁছে যান মেমারির ‘সম্প্রীতি ঐক্য’ এর সদস্যরা এবং ওই ভবঘুরে বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সেখানে ওই অজ্ঞাত পরিচয় বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। হাসপাতাল থেকে খবর দেওয়া হয় ‘সম্প্রীতি ঐক্য’-এর সদস্যদের। তাদের চেষ্টায় বৃদ্ধার পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায়। জানা যায় বৃদ্ধার নাম স্বদেশী ক্ষেত্রপাল। বাড়ি পাঁচড়ার ঘোলার পাড় এলাকায়। ২০ বছর আগে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের খোঁজ পাওয়া গেলেও মৃতদেহ সৎকার করার মত আর্থিক সঙ্গতি তাদের ছিলনা। সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসে মেমারি শহরের এক দল মুসলিম যুবক। হাসপাতাল থেকে দেহটি যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে তারা অ্যাম্বুলেন্স করে শ্মশানে নিয়ে যান এবং অন্তিম ক্রিয়া সম্পন্ন করেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করে সবার প্রশংসা আদায় করে নেয় তারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে মেমারি সম্প্রীতি ঐক্যের সদস্যরা প্রমাণ করে দিলেন ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ মহাপুরুষের এই অমোঘ বাণী ক্ষমতালোভী, বিদ্বেষকামী রাজনীতির কারবারিদের জন্য মিথ্যা হতে পারেনা। এটাই বাংলা তথা ভারতের আসল চিত্র। প্রকৃত অর্থেই ‘মোরা এক বৃন্তে দুইটি কুসুম হিন্দু মুসলমান’।


















