eaibanglai
Homeএই বাংলায়‘ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব’-এ গিয়ে বিশ্বজয় পুরুলিয়ার কন্যের

‘ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব’-এ গিয়ে বিশ্বজয় পুরুলিয়ার কন্যের

সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- ৮২তম ‘ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব’-এ সেরা পরিচালকের খেতাব পেয়ে চমকে দিয়েছেন পুরুলিয়ার মেয়ে অনুপর্ণা রায়। ‘সংগস অফ ফরগটেন ট্রিজ়’ ছবির জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে তাঁকে। এটি প্রথম ভারতীয় সিনেমা, যা ‘অরিজন্টি’ বিভাগে সেরা পরিচালকের পুরস্কার জয় করেছে। নারী ভিত্তিক এই সিনেমাটিতে উঠে এসেছে নারীদের গল্প। যেখানে তাঁদের জীবনের একাকিত্ব এবং সংগ্রাম তুলে ধরা হয়েছে।

এই বঙ্গ তনয়া ইতি মধ্যেই দু’দুটি চলচ্চিত্র তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন। ২০২৩ সালে তাঁর পরিচালিত মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘রান টু দ্য রিভার’ এবং ২০২৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সংগস অফ ফরগটেন ট্রিজ়’। তবে ‘রান টু দ্য রিভার’ তাঁর তৈরি প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি।

সাদা শাড়ি লাল পাড়ে ভেনিসের মঞ্চে পুরস্কার নিতে দেখা গেছে পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ব্লকের নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা আটপৌঢ়ে মেয়েটিকে। পুরস্কার জয়ের পরে সোশ্যাল মিডিয়া ভরে গিয়েছে শুভেচ্ছাবার্তায়। পরিচালক অনুপর্ণাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘আমাদের পুরুলিয়ার মেয়ে অনুপর্ণা রায়ের আন্তর্জাতিক পুরস্কার পাওয়ার খবরে আমি আন্দনিত। আমি তাঁকে, তাঁর মা-বাবাকে, তাঁর সকল বন্ধু-সহযোগীকে অভিনন্দন জানাই।’

অনুপর্ণার বাবা ব্রহ্মানন্দ রায় নিতুড়িয়ায় রানিপুর কোলিয়ারির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। সেই সূত্রে ছেলেবেলা থেকে কৈশর নিতুড়িয়ার বাড়িতেই বেড়ে ওঠা অনুপর্ণার। স্থানীয় রানিপুর কোলিয়ারি হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে তিনি চলে যান দুর্গাপুরে। পরে কুলটি কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে স্নাতক হন এবং মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনার জন্য দিল্লিতে পাড়ি দেন। পড়াশোনা শেষ করে কিছুদিন আইটি সেক্টরে কাজও করেন। কিন্তু চাকরির বাঁধাধরা জীবনে মন টেকেনি এই বঙ্গ তনয়ায়। সৃজনশীল কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে পুরুলিয়ার এই মেয়ে পাড়ি দেয় স্বপ্ন নগরী মুম্বইতে। তারপর তাকে আর থেমে থাকতে হয়নি। যদিও চাকরি ছেড়ে মুম্বাই পাড়ি দেওয়া প্রথমে উদ্বেগই প্রকাশ করেছিলেন বাবা ব্রহ্মানন্দ রায় ও পরিবারের সকলে। ব্রহ্মানন্দ মেয়েকে বুঝিয়েছিলেন চাকরি জীবনের আর্থিক স্বচ্ছলতা ছেড়ে বেরিয়ে গেলে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিৎ হয়ে পড়বে। কিন্তু সেই মেয়েই সোমবার গভীর রাতে বাবাকে ফোন করে জানায়, “শুনেছ পুরস্কার পেয়েছি?” মেয়েকে নিয়ে উদ্বেগ এখন গর্বে পরিণত হয়েছে কলিয়ারির প্রাক্তন কর্মচারী ব্রহ্মানন্দবাবুর কাছে। ব্রহ্মানন্দ রায় বলেন, ‘ও ছোটবেলায় পড়াশোনায় ভালো ছিল। খোলাধুলাও করতো। আমি চেয়েছিলাম ও চাকরি করুক। নিজের পায়ে দাঁড়াক। কিন্তু আইটির চাকরি ছেড়ে ও চলে যায় সিনেমা জগতে।’ মেয়ের সাফল্যে গর্ব ফুটে উঠল বাবার চোখে-মুখে।

মেয়ের ফেরার জন্য এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে গোটা রায় পরিবার। সোমবারই ইতালি থেকে মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন অনুপর্ণা। মধ্যরাত পৌঁছন মুম্বই। তবে এখনই বাড়ি ফেরা হবে না বাড়ির মেয়ে। আগামী অক্টোবর মাসে লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভালে অংশ নেবেন আর সেই জন্য আপাতত মুম্বইতেই ব্যস্ত থাকবেন পুরলিয়ার সেই ডানপিটে মেয়েটা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments