সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী),বহরমপুরঃ- গুরু শিষ্যের কথা বললে সবার আগে যে দুটি নাম বা মুখ ভেসে আসে তারা হলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের এবং তাঁর যোগ্য শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ। এই দুই গুরু শিষ্যের কথা সব সময় আলোচিত হয় সব জায়গায়। কিন্তু স্বামীজি দীক্ষা নেওয়ার আগে পর্যন্ত রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে সবসময় পরীক্ষা করে গিয়েছেন। তিনি যাচাই করে দেখেছেন তাঁর গুরু আসলেই সত্য সত্য অবতার কিনা। এইরকম একটি ঘটনার কথা আজকে বলবো যেখান থেকে জানা যায় যে একবার স্বামীজি রামকৃষ্ণকে একটি কথা বলেছিলেন কিন্তু তার পরিপ্রেক্ষিতে পরমহংসদেব যা বলেছিলেন তা ভবিষ্যতের স্বামীজীর জীবনে প্রতিফলিত হয়েছিল, স্বামীজি বুঝে ছিলেন তাঁর গুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব আসলে কত বড় একজন অবতার পুরুষ ছিলেন। যিনি সত্যই একজন ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা ছিলেন। ম্যাকলাউডের জীবনীতে উল্লেখিত সেই ঘটনার কথায় আজকে বলবো-
একদিন ট্যন্টিন অর্থাৎ জোসেফিন ম্যাকলাউড স্বামী বিবেকানন্দের জন্য একটি চমৎকার খাট পাঠান মঠে, এই খাটটি দেখা মাত্রই স্বামীজি কাঁদতে শুরু করেন। তার কান্না শুনে সকলেই অবাক সকলে জিজ্ঞেস করেন যে খাট দেখে তিনি কাঁদছেন কেন? তখন স্বামীজি বলেন, “দেখো সেই পাগলা বামুন যা যা বলেছিলেন সব ফলছে, এমনকি সামান্য খাটের ঘটনাটি পর্যন্ত। আমার বয়স যখন বছর কুড়ি তখন আমি শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে গিয়েছিলুম। আমায় দেখে তিনি বলেছিলেন,‘নরেন, সাধারণ সংসারী লোকের মত এভাবে চুলে টেরি কাটিস নে !’ আমি উত্তর দিলুম,‘জাগতিক লোকের মতো চুল আঁচড়ালে যদি আমার দোষ হয়, তাহলে আমাকে বলুন, সাধু হয়ে আপনার বিছানায় প্রাকৃত লোকেদের মতো আরামদায়ক তোশক-গদি কেন?’ শ্রীরামকৃষ্ণ আমার কথা শুনে বললেন,‘নরেন, আমি চলে যাওয়ার অনেক পরে তুই যখন আমার চাইতেও বড় হবি, তখন এখানকার এই তোশক-গদির চেয়েও অনেক বড় বিছানা পাবি।’ দেখতে পাচ্ছ, তাঁর প্রতিটি কথা কতখানি অভ্রান্ত!”