সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবকে রামচন্দ্রের অবতার বলা হয়। অনেকে আবার মনে করেন তিনি অবতার পুরুষ নন তিনি একজন মহান সাধক। এই বিতর্কে না গিয়ে আজকে আমি এমন একটি ঘটনার কথা বলব যা রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব এবং রাম ভক্ত হনুমানের সঙ্গে সম্পর্কিত। একবার ঠাকুরের খুব সাধ হল তিনি চালকুমড়োর তরকারি খাবেন। সেদিন তন্নতন্ন করে খুঁজে কোথাও চালকুমড়ো পাওয়া গেল না । অনেক খোঁজাখুজি করে, এমনকি বাজারেও চাল কুমড়া মিলল না, তখন এক গৃহস্থের বাড়ির ছাদে চালকুমড়োর দেখা মিলল। কিন্তু গৃহস্থকে অনুনয় করা বৃথা হলো।
গৃহস্থকে ভক্তরা অনুনয় করে বলেন, আমরা দক্ষিণেশ্বর থেকে আসছি , আমাদের ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেব চালকুমড়ো খেতে চেয়েছেন, কিন্ত বাজারে কোথাও পেলাম না। আপনার বাড়ির ছাদে দেখলাম একটি আছে, যদি দয়া করে ওটি বিক্রি করেন। গৃহস্থ তৎক্ষণাৎ না করে দিয়ে বলেন , ওটি আমার গৃহদেবতার জন্য কুটো বেঁধে রাখা আছে , আমি দিতে পারব না। বিফল মনোরথ নিয়ে এইবার ভক্তরা ফিরে এলেন ও ঠাকুরকে সব কথা খুলে বলতে না বলতেই বারান্দাতে একটি ধূপ করে আওয়াজ হল।
ঘরের বাইরে এসে বিস্মিত ভক্তরা দেখলেন সবাই দেখেন, হনুমানজি স্বয়ং দরজার ঠিক সামনে একটা চালকুমড়ো নামিয়ে রেখে আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে ঠাকুর বালকের মতো আনন্দ করে বললেন, ‘দ্যাখ দ্যাখ, স্বয়ং মহাবীরজি মাথায় করে ওটা পৌঁছে দিলেন’ স্তম্ভিত ভক্তগণ নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেন না তখনও! তারা ভাবছেন, ইনিই কি সেই ত্রেতা যুগের পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্র।
সত্যই ঈশ্বরের লীলা কে বুঝতে পারে? ‘কে তোমারে জানতে পারে, তুমি না জানালে পরে।’ ভগবানকে তাই সব সময় প্রার্থনা করতে হয় তোমাকে অনুভব করার ক্ষমতা দাও। আমরা শুধু কেঁদে কেঁদে বলি তোমাকে অনুভব করতে পারি না, কিন্তু ভগবান ক্ষমতা না দিলে এই চর্মচক্ষু দিয়ে তাকে অনুভব করা যায় না, তাই ভক্তকে আকুতি ভরে ডাকতে হয়, আকুতি ভরে ডাকলে তিনি ঠিক শুনবেন।