জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বীরভূমঃ- গত ২২ শে জানুয়ারি রামপুরহাটের সুপরিচিত ‘ইন্দ্রধনু আর্টস এণ্ড কালচার’ প্রতিষ্ঠানের অঙ্কন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আঁকা শতাধিক ছবি নিয়ে চিত্র প্রদর্শনী হলো রামপুরহাট পৌর ময়দানের নেতাজী মুক্ত মঞ্চে। সকাল ১০ টা থেকে এই প্রদর্শনী শুরু হয় ও চলে রাত্রি ৮ টা পর্যন্ত।
চিত্র প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে এলাকার চিত্রপ্রেমী মানুষের মধ্যে যথেষ্ট উৎসাহ দ্যাখা যায়। প্রদর্শনী শুরু হওয়ার আগে থেকেই উৎসাহিদের যথেষ্ট ভিড় দ্যাখা যায়। শেষ পর্যন্ত সেই ভিড় বজায় ছিল। তারা ঘুরে ঘুরে প্রতিটি চিত্র পর্যবেক্ষণ করেন। প্রতিটি চিত্রের কাছে সংশ্লিষ্ট চিত্রটির শিল্পী থাকায় ছবিটির তাৎপর্য বুঝতে দর্শকদের খুব সুবিধা হয়। এমনকি ক্ষুদে শিল্পীরাও অনায়স ভঙ্গিতে তার আঁকা চিত্রের মর্মকথা দর্শকদের সামনে তুলে ধরে। দর্শকরাও খুশি হয়ে ছবি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যে প্রায় পঁচাত্তরটির মত ছবি বুকিং হয়ে গ্যাছে।
তৃষ্ণা, সুচরিতা, পীযুশ, চন্দ্রশেখর, প্রিয়া, পৃত্তিষা, দেবস্মিতা, সৌমিতা, জয়িতা , অনুরাগ, পর্ণাশ্রী, দেবত্রিকা সহ প্রত্যেক শিল্পীর আঁকা চিত্র যথেষ্ট আকর্ষণীয় ছিল। চিত্রগুলি দেখে বোঝায় যাবেনা এদের অধিকাংশের বয়স ১২ বছরের নীচে। প্রতিটি দর্শক তাদের আঁকা চিত্রের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এর আগে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চিত্র প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন করেন রামপুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকত। তার হাতে নেতাজীর প্রতিকৃতি তুলে দেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিমাই দে। তখন করতালিতে ফেটে পড়ে উপস্থিত দর্শক।
সৌমেন বাবু বলেন – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৌজন্যে শিল্পের প্রতি বীরভূমবাসীর যে একটা আলাদা আগ্রহ আছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আশাকরি এই প্রদর্শনী নতুন প্রজন্মের আগ্রহ বাড়বে। প্রদর্শনীর আয়োজন করার জন্য তিনি নিমাই বাবুর প্রশংসা করেন।
চিত্র প্রদর্শনীর কথা শুনে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন আসানসোলের বিশিষ্ট অঙ্কন শিল্পী ধনঞ্জয় মুখার্জ্জী। তিনি বললেন – অঙ্কন করতে হলে দরকার ধৈর্যের। বর্তমানে যেভাবে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মোবাইল কালচার বাড়ছে তাতে অঙ্কনের প্রতি আগ্রহ হলে মোবাইলের প্রতি তাদের আকর্ষণ কমবে ও পড়াশোনার প্রতি মনঃসংযোগ বৃদ্ধি করবে। সুতরাং অভিভাবকরা বিষয়টি ভেবে দেখলে লাভ হবে তাদের সন্তানদের।
প্রসঙ্গত প্রতিষ্ঠানের অঙ্কন শিক্ষক নিমাই দে রামপুরহাটের জনৈক শিক্ষকের কাছে অঙ্কন শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে কলকাতায় যান। রামপুরহাটে ফিরে এসে একাধিক প্রতিষ্ঠানে অঙ্কন শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। শেষ পর্যন্ত অভিভাবকদের অনুরোধে প্রায় এক বছর আগে নিশ্চিন্তপুরে নিজের বাড়িতে নিজস্ব অঙ্কন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ইন্দ্রধনু’ গড়ে তোলেন। বর্তমানে শতাধিক শিক্ষার্থী প্রবল আগ্রহে এখানে অঙ্কন শিক্ষা লাভ করছে।
নিমাই বাবু বললেন – শুধু শিক্ষা নয়, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি। দর্শকরা যখন তাদের আঁকা চিত্রের ভূয়সী প্রশংসা করে তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলাদা উৎসাহ দ্যাখা যায়।