নিজস্ব সংবাদদাতা, রানিগঞ্জঃ– খোলা মুখ খনিতে কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়ে মৃত্যু একাধিক গ্রামবাসীর। মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের রানিগঞ্জের ইসিএলের নারায়ণকুড়ি কয়লাখনিতে। মৃতদের মধ্যে ৩টি দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। যদিও স্থানীয় সূত্রে খবর খনিতে ধস চাপা পড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪টি দেহ পুলিশ উদ্ধার কাজ শুরু করার আগেই সবার অলক্ষ্যে সৎকার করে দেওয়া হয়। অভিযোগ ওই গ্রামবাসীরা খনিতে অবৈধ ভাবে কয়লা সংগ্রহে নেমেছিল।
ঘটনা প্রসঙ্গ জানা যায় বুধবার সন্ধ্যয় ইসিএলের ওই খোলামুখ খনিতে কয়লা সংগ্রহ করতে নেমেছিল খনি সংলগ্ন গ্রামের কিছু বাসিন্দা। সেই সময় হঠাৎ খনিতে ধস নামে ও কয়লা সংগ্রহ করতে নামা গ্রামবাসীরা চাপা পড়ে যায়। রাতে খবর পেয়ে ছুটে যায় পুলিশ ও ইসিএলের উদ্ধারকারী টিম। সারা রাত উদ্ধার কাজ চালানোর পর অবশেষে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তিন জনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
অন্যদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল এবং উদ্ধারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিনি এবং দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান তিনি। ঘটনায় ইসিএল এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় কয়লা চুরি চলছিল। সেকথা কী জানত না ইসিএল, পুলিশ? পেটের জ্বালায় গ্রামের মানুষজন দু’-চার বস্তা কয়লা বের করে বিক্রি করে সংসার চালান, রাজ্য সরকার তো কাজের ব্যবস্থা করেনি। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা এই কাজ করে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।” অন্যদিকে এই ঘটনায় সরকারি তথা প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে স্থানীয় বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।
প্রসঙ্গত আসানসোল খনি এলাকা গুলি থেকে কয়লা চুরির অভিযোগ নতুন কোনো ঘটনা নয়। দীর্ঘদিন ধরে ইসিএলের খনি থেকে অবৈধভাবে কয়লা চুরি ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসন, শাসক দলের নেতা মন্ত্রী ও ইসিএলের কিছু কর্মী আধিকারিকদের সহযোগীতায় চলে এই পাচার চক্র। সম্প্রতি অবৈধ কয়লা পাচারের তদন্তে নেমে ইসিএলের প্রাক্তন ও বর্তমান বেশকিছু কর্মী ও উচ্চ পদস্থ কর্মী আধিকারক সহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কয়লার এই অবৈধ পাচার নিয়ে রাজনৈতিক চাপান উতোর, সরকারি তদন্ত সব কিছু চলার পাশাপাশি কয়লা চুরি ও পাচার যে অব্যাহত তা এদিনের দুর্ঘটনা আবারও একবার প্রমাণ করে দিল।