সন্তোষ কুমার মণ্ডল,রানীগঞ্জঃ- ভারতে ওষুধের বাজারের আনুমানিক মূল্য ৪০ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষা-রিপোর্টে জানা গেছে, ভারতের ওষুধ বাজারের ২০ শতাংশ জাল, নিম্নমানের এবং ভেজাল ওষুধের দখলে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সমীক্ষা অনুসারে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে প্রতি ১০টি ওষুধের মধ্যে একটি নিম্নমানের বা জাল হওয়ার কারণে রোগ সারাতে ব্যর্থ হয়। আমাদের দেশ তার মধ্যে অন্যতম।
এই জাল ওষুধের রমরমা আটকাতে রাজ্য জুড়ে কাজ করছে বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। সম্প্রতি তারা জাল ওষুধ নিয়ে সাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে রানীগঞ্জে একটি কর্মসূচির আয়োজন করেছিল। সচেতনতা র্যালি ও পথ সভা। তারবালা মোড় থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে ডাল পট্টি মোড়, ইতোয়ারী মোড় হয়ে নেতাজি মূর্তির সামনে শেষ হয়। সেখানে একটি পথসভারও আয়োজন করা হয়েছিল। সেই পথসভায় বিভিন্ন বক্তারা সাধারণ মানুষকে জাল বা নকল ওষুধ কিভাবে তারা সনাক্ত করতে পারবেন সে সম্পর্কে অবহিত করেন।
সভায় সংগঠনের রানিগঞ্জ শাখার সম্পাদক তিমির বরণ মণ্ডল এবং সভাপতি মহেশ সরাফ সহ সংগঠনের আরো সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তিমির বরণ মণ্ডল বলেন, “আমরা জনগণকে সচেতনত করার ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি । যাতে মানুষ জাল ওষুধের ফাঁদে না পড়েন ।” এর পাশাপাশি কোনো ওষুধ কেনার আগে কিউআর কোড পরীক্ষা করা ও ওষুধ কেনার সময় সর্বদা মেমো নেওয়ার আবেদন জানান তিনি। তিনি বলেন, “মানুষ যদি এটা করেন, তাহলে এই ব্যবসায়ীরা জাল ওষুধ সরবরাহ করতে পারবে না।”
অন্যদিকে, সংগঠনের সভাপতি মহেশ কুমার সরাফও জাল ওষুধ নিয়ে সচেতন করে বলেন, “আগে জাল ওষুধের বাংলায় তেমন প্রভাব ছিল না। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে দেখা যাচ্ছে যে বাংলায়ও জাল ওষুধের বাজার বাড়ছে। এটা বন্ধ করার প্রয়োজন রয়েছে।আমাদের সংগঠন ক্রমাগত মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে।” পাশাপাশি তিনিও ওষুধ কেনার সময় কিউআর কোডের মাধ্যমে পরীক্ষা করার পরামর্শও দেন।
অন্যদিকে জাল ওষুধের রমরমা ঠেকাতে সম্প্রতি কড়া পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ। জাল ওষুধ নিয়ে অভিযোগ জানাতে টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হয়েছে (টোল ফ্রি নম্বর ১৮০০১৮০৩০২৪)। ওষুধ বিক্রির রিটেলার ও ডিস্ট্রিবিউটারদের অবিলম্বে দোকানে পোস্টার লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পোস্টারে কিউআর কোড এবং টোল ফ্রি নম্বর থাকতে হবে, যাতে কোনও অভিযোগ থাকলে, কিউআর কোড-সহ টোল ফ্রি নম্বরে সরাসরি ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

















