সন্তোষ কুমার মণ্ডল,রানিগঞ্জঃ- সম্প্রতি রানিগঞ্জের বণিক সভা, বাঁকুড়া মৈত্রী সংঘ সহ একাধিক সংগঠন ও বিভিন্ন মহল থেকে রানিগঞ্জ স্টেশন থেকে বাঁকুড়া পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের দাবি উঠলো। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নেত্রীরাও এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত রানিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়া শহর, প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরত্ব মেটাতে দুই জেলার মধ্যে বাস পরিষেবা রয়েছে। কিন্তু অভিযোগ সেই বাস দিনভর প্রয়োজন মতো মেলেনা। ফলে বহু মানুষকে দুর্গাপুর হয়ে বাসে বা আসানসোল থেকে ট্রেনে বাঁকুড়ায় যেতে হয়। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের। আবার রেলপথে আসানসোল থেকে বাঁকুড়ার দূরত্ব ৯৪ কিলোমিটার। কিন্তু ডিভিসির মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার সরবরাহের জন্য রানিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়ার মেজিয়া পর্যন্ত রেললাইন রয়েছে। ওই রেল পথ দিয়ে নিয়মিত কয়লার মালগাড়ি যাতায়াত করে। ওই পথে মাত্র ৩০ কিলোমিটার রেললাইন সম্প্রসারণ করলে বাঁকুড়া শহর ও রানিগঞ্জের দূরত্বও অনেকটাই কমে যাবে। যার ফলে আসানসোল ,জামুরিয়া রূপনারায়নপুর, চিত্তরঞ্জন, বীরভূমের বাসিন্দারা খুব সহজে ও কম সময়ে বাঁকুড়ায় পৌঁছে যেতে পারবেন। প্রসঙ্গত বীরভূম ও রানিগঞ্জ সংলগ্ন এলাকার বহু মানুষকে কিৎসার জন্য বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজে যাতায়াত করতে হয়। তেমনই বাঁকুড়ার লোকেদেরেও নানা কাজে রানিগঞ্জ ও আসানসোলের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াক করতে হয়।
বাঁকুড়ার সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ব্যবসা এবং শিল্পের যোগাযোগ বাড়াতে রানিগঞ্জ মেজিয়া রেললাইনটিকে আরো ৩০ কিলোমিটার সম্প্রসারণের দাবি জানিয়ে রেলমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন রানিগঞ্জ বণিকসভার অন্যতম উপদেষ্টা রাজেন্দ্র প্রসাদ খৈতান। তিনি বলেন, “রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রানিগঞ্জ থেকে এই রেললাইন যোগাযোগের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পরে আর এই কাজে এগোয়নি।”
বাঁকুড়া “মৈত্রী সংঘে”র তরফে বাসুদেব মন্ডল বলেন, “রানিগঞ্জ থেকে মেজিয়া রেললাইন সংযুক্ত করলে সত্যি সত্যি হাজার হাজার মানুষের উপকার হবে। বর্তমানে বিকেলের দিকে রানিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়ার দিকে যাওয়ার কোন বাস নেই। আমরা বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়া এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার রাজনৈতিক নেতাদের কাছে আবেদন করেছি, তারা যেন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখেন ও ব্যবস্থা নেন।”
পূর্ব রেলের প্রাক্তন জেডআরইউসিসি সদস্য তথা সামাজিক সংগঠন “ভাবনা”র সভাপতি বিশ্বদেব ভট্টাচার্য বলেন, এই দুই জেলার রাজনৈতিক সাংসদদের এই বিষয়ে রেলমন্ত্রীর সাথে কথা বলে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এতে সকলেই লাভবান হবেন। এই নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই রেলকর্তাদের চিঠি দিয়েছি।
আসানসোলের পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমি আগেও রেল মন্ত্রকে একটি চিঠি লিখেছি।”
অন্যদিকে, আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বিজেপি বিধায়িক অগ্নিমিত্রা পাল রেলমন্ত্রীকে এই বিষয়টি আবেদন করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।