নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- রবিবার ১৩ শহীদের নামে ১৩ টি বৃক্ষ রোপন করে ২১ জুলাইয়ের শহীদ স্মরণ করল পশ্চিম বর্ধমান জেলা যুব কংগ্রেস। এদিন সকালে ইস্পাত নগরীর বি-জোনের কাশীরাম রোডস্থিত নেহেরু ভবনে ২১ এর শহীদদের স্মৃতি তর্পণ কর্মসূচি পালন করা হয়। নেতৃত্বে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির কার্যকরী সদস্য তরুণ রায়। এদিনের কর্মসূচিতে ১৯৯৩ সালে পুলিশের গুলিতে নিহত ১৩ জনের নামাঙ্কিত মোট ১৩ টি বৃক্ষ রোপন করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করা হয়। এই শহীদরা হলেন- বন্দনা দাস, মুরারী চক্রবর্তী, রতন মণ্ডল, কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ রায়, অসীম দাস, কেশব বৈরাগী, শ্রীকান্ত শর্মা, দিলীপ দাস, রঞ্জিত দাস, প্রদীপ দাস, মহম্মদ খালেক, ইনু। এদের প্রত্যেকের নামে আলাদা আলাদা করে ১৩ টি বৃক্ষ রোপণ করা হয়।
প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির কার্যকরী সদস্য তরুণ রায় অদিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, “শহীদদের নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। ১৯৯৩ সালে যুব কংগ্রেসের ডাকে সভায় যোগ দিতে গিয়েই ১৩ জন দলীয় কর্মীর মৃত্যু ঘটেছিল পুলিশের গুলিতে। সেই রক্ত ছিল কংগ্রেসের। তাই এই মর্মান্তিক ঘটনার সঙ্গে অন্য কোনো দল নয়, কেবল মাত্র কংগ্রেসই জড়িয়ে রয়েছে। দেশের জন্য কেবল কংগ্রেস কর্মীরাই আত্মত্যাগ ও আত্মবলিদান করতে পারে। আমাদের দেশে তার একাধিক নজির রয়েছে।”
তরুণ রায় ছাড়াও এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর মহকুমা কংগ্রেস সেবাদলের সভাপতি অমল হালদার, আই এন টি ইউ সি নেতা রানা সরকার, পূর্ণেন্দু পান্ডা, সংগঠনের যুব নেতা সিকান্দার আলী, সুব্রত ঘোষ সহ সংগঠনের অন্যান্য কর্মী ও সদস্যরা।
উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে রাজ্যে তখন ক্ষমতায় সিপিএম সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে জ্যোতি বসু। সেই সময় বিরোধী কংগ্রেসের অন্যতম লড়াকু মুখ ছিলেন তৎকালীন বাংলার যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য, সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিতে ২১ জুলাই মহাকরণ অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। সেই কর্মসূচিতে যোগ দিতে রাজ্যের সব জেলা থেকেই যুব কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা কলকাতা পৌঁছন ও ধর্মতলা অভিমুখে রওনা দেন। কিন্তু তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। বাড়তে থাকে উত্তেজনা। যুব কংগ্রেসের কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে সভাস্থলে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। আর তখনই পুলিশ গুলি চালালে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই ২১ জুলাই দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ যুব কংগ্রেস।