eaibanglai
Homeএই বাংলায়পুলিশ মেঘনাথের গুলিতে ডাকাত বধ ও শেষমেষ গ্রেফতার

পুলিশ মেঘনাথের গুলিতে ডাকাত বধ ও শেষমেষ গ্রেফতার

সংবাদদাতা, সালানপুর, রানিগঞ্জ,আসানসোলের :- পুলিশের একটা বদর্নাম রয়েছে বহুদিন ধরেই, ঘটনা ঘটার বহু পরে নাকি এসে পৌঁছায় পুলিশ । কিন্তু সেই প্রবাদ বাক্য আজ মিথ্যা করে দেখালেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মেঘনাদ মন্ডল। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত জামুরিয়া থানার অধীনে শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি মেঘনাথ মন্ডল। এদিন তিনি রানীগঞ্জ বাজারে নিজের ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলেন। কিন্তু তার পুলিশি নজরে সামনে একটি সোনার দোকানে ডাকাতি হচ্ছে চোখে পড়ে। তৎক্ষণাৎ তিনি তার সঙ্গে থাকা সার্ভিস রিভলবার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন ডাকাত দলের ওপরে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর মতন ঝাঁপিয়ে পড়েন ডাকাত দলের ওপরে ও প্রথম গুলিতেই ডাকাত দলের এক পান্ডাকে গুরুতর আহত করতে সক্ষম হন। কিন্তু সশস্ত্র ডাকাত দলটির সকল সদস্যই একসাথে গুলিবর্ষণ করতে থাকে পুলিশ অফিসার মেঘনাদ মন্ডলের ওপর। বেশ কয়েকটি বৈদ্যুতিক খুঁটির আড়াল থেকে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বাংলা মায়ের বীর পুলিস সন্তান মেঘনাথ মন্ডল। ডাকাত দলের সঙ্গে লড়াই করতে করতে তার বন্ধুকের সব কটি গুলি প্রায় শেষ হয়ে যায়। পুলিশের এই কড়া মনোভাব দেখে ডাকাতর দলের সদস্যরা মুহূর্তের মধ্যে তাদের আহত সহকর্মীকে নিয়ে এলাকা থেকে চম্পট দেয় একটি বাইকে করে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বীর পুলিশ আধিকারিক মেঘনাদ মন্ডল আবারো প্রমাণ করলেন বাংলার পুলিশ দুষ্কৃতী দলের মুখোমুখি চ্যালেঞ্জে পাল্লা দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে।

উল্লেখ্য আজ দুপুর ১২:১৫ নাগাদ ৬-৭জন সশস্ত্র ডাকাত রাণীগঞ্জের একটি সোনার দোকান সেনকো গোল্ডে ঢুকে লুঠপাট চালায়। এদের অনেকেই মাথায় হেলমেট পরেছিল। ডাকাত দল অত্যাধুনিক কার্বাইননসহ সব আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সোনার দোকানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা রক্ষিদের বন্দুক কেড়ে নিয়ে দোকানের ভেতরে ঢুকে দোকানের মধ্যে থাকা সমস্ত কর্মী ও ক্রেতাদের বন্দুকের নিশানাই রেখে ১০-১৫ মিনিট ধরে লুটপাট চালায়। এই ডাকাতির ঘটনা বুঝতে পেরে শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি মেঘনাথ মন্ডল বাইরে থাকে ডাকাত দলের কয়েকজনের উদ্দেশ্যে গুলি ছুঁড়তে থাকলে, পাল্টা ডাকাতর দলের পক্ষ থেকেও লাগাতার গুলি ছোড়া হয়। এই ঘটনায় দীর্ঘক্ষণ ধরে এলাকার আশেপাশে গুলির লড়াই চলতে থাকে। পুলিশ দ্রুত সক্রিয় হয়ে ডাকাতদের উদ্দেশ্যে গুলি করতে থাকায় ডাকাত দলের একজন এই ঘটনায় আহত হয়। যদিও দ্রুতগতিতে তারা বাইক নিয়ে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। জানা গেছে হিন্দি ভাষাভাষী ২২,২৫ বছরের ৮ জন যুবক হঠাৎ করেই ঢুকে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটায়। এই ঘটনার পর নিরাপত্তা রক্ষির আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় ডাকাত দল। যদিও মুহূর্তে এই ডাকাতির খবর ছড়িয়ে পড়ায় আশেপাশের হাজারো মানুষ এ মুহূর্তে জড়ো হয়েছে রানীগঞ্জের তার বাংলা অঞ্চলে।

অন্যদিকে রবিবার ছুটির দিনের দুপুরের রানিগঞ্জ শহরের পরে আসানসোল শহরের মহিশীলা কলোনির মতো জনবহুল এলাকায় গুলি চালিয়ে গাড়ি ছিনতাই করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গেছে, দূর্গাপুরের বামুনআড়ার বাসিন্দা নয়ন দত্ত একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী। তার শ্বশুরবাড়ি আসানসোলের জিটি রোডের মুর্গাশোল এলাকায়। এক আত্মীয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ শ্বশুর বাড়ি থেকে চারচাকা গাড়ি নিয়ে মহিশীলা কলোনির বটতলা বাজারে ম্যারেজ হলে আসছিলেন। তার সঙ্গে স্ত্রী ও সন্তান ছিলো। মহিশীলা কলোনির চক্রবর্তী মোড়ে আগে থেকেই চার যুবক দাঁড়িয়েছিলো। নয়ন দত্তর গাড়ি সেখানে আসতেই তাকে তারা দাঁড় করায়। তিনি গাড়ি দাঁড় করাতেই চালকের আসনের দরজা খুলে তাকে জোর করে টেনে নামানো চেষ্টা করে। নয়ন দত্ত নামের ওই যুবকের বাঁপায়ের থাইয়ে একটি গুলি লাগে। ওই যুবকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে দূর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গুলির শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকেরা দৌড়ে আসেন। ততক্ষণে তিন যুবক গাড়িতে উঠে গেছে। সেই সময় প্রবাল সান্যাল বাধা দিতে এলে, তাকেও লক্ষ্য করে গুলি চালায় ঐ যুবকেরা। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকার বাসিন্দারা ভয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। সেই সুযোগে চারজন ঐ চারচাকা গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয়। গুলিতে আহত নয়ন দত্ত বলেন “আমাকে চারজন আটকায়। তারা বলে তাদের একজনের লেগেছে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। আমি তখন তাদেরকে বলি, আমার সঙ্গে ফ্যামিলি আছে। অনুষ্ঠান বাড়ি যাচ্ছি। ওয়েট করুন। কেউ চলে আসবে। তখন আমাকে টেনে বার করে গুলি চালায়।”

আজ সকালের ভয়াবহ সেই ডাকাতির পর দুষ্কৃতী দলের সেই আহত হওয়া ব্যক্তিকে শেষমেষ পুলিশ গ্রেফতার করতে পেরেছে বলেই জানিয়েছেন। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি ধ্রুব দাস। এদিন এই ডাকাতির ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ প্রশাসন সচেতন হয়ে যায় ওদিকে দিকে চলে নাকা তল্লাশি তবে তার আগেই পুলিশের আধিকারিক গুলির লড়াই করে দুষ্কৃতি দলকে অনেকটাই কাব্য করে ফেলে। এরপরই রবিবার সন্ধ্যে নাগাদ মেলে সফলতা। পুলিশ অনুমান করছে ঝাড়খণ্ডের কোন একটি গাং এই সোনার দোকানে সুপরিকল্পিতভাবে ডাকাতি করার পরিকল্পনা করেছিল যা আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের পুলিশ অনেকটাই বিফল করেছে বলেই দাবি করেছেন তারা। আগামীতে দুষ্কৃতিকারীদের আরো সকল সদস্যদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে কিনা তা অবশ্য বলবে সময়। তবে এদিন লুটপাট করা কোন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেন নি প্রশাসন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments