জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বীরভূমঃ- লোকসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক কারণেই বাড়ছে না রাস্তা। কিন্তু নিত্য বেড়েই চলেছে গাড়ির সংখ্যা। ফলে দুর্ঘটনা এবং তৎজনিত অকাল মৃত্যু ও আহতের সংখ্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সমাজকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জী লক্ষ্য করে দেখেছিলেন কার্যত ট্রাফিক আইনকে লঙ্ঘন করে মাথায় হেলমেট ছাড়াই গতির নেশায় মেতে ওঠা যুব সম্প্রদায় শেষ পর্যন্ত গতির কাছে হার মেনে অকালে না ফেরার দেশে চলে গ্যাছে। পথ চলতে চলতে পথেই হারিয়ে যায় মহার্ঘ জীবন। আর দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে গ্যাছে নিকট আত্মীয় স্বজনদের। গতি জনিত দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০১৬ সালের জুলাই মাসে তিনি চালু করেছিলেন ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্প। লক্ষ্য একটাই দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনা।
তাঁর এই প্রকল্পকে বাস্তবে সফল করার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার মত দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছে বীরভূমের তারাপীঠ থানার পুলিশ আধিকারিকরা। মাঝে মাঝে শহরের বুকে তারা ট্রাফিক সচেতনতা শিবিরের আয়োজনও করেছে। প্রতি ক্ষেত্রে পাশে পেয়েছে স্হানীয় মানুষদের।
৭ ই ডিসেম্বর তারাপীঠ থানার উদ্যোগে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে ট্রাফিক সচেতনতা সংক্রান্ত একটা র্যালি বের হয় তারাপীঠ শহরে। তিন মাথা মোড় থেকে এই র্যালি যাত্রা শুরু করে এবং শেষ হয় আটলা মোড়ে।
থানার বড়বাবু রঞ্জিত বাউরির উদ্যোগে প্রায় আধ কিলোমিটার ব্যাপী এই র্যালিতে পা মেলান মেজ বাবু জাকির আলি, এএসআই সমীর কোনার, এএসআই দিলীপ মণ্ডল সহ থানার সঙ্গে যুক্ত সিভিক ভলাণ্টিয়াররা এবং শহরের বেশ কয়েকজন টোটো চালক ও সাধারণ মানুষ। র্যালিকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মনে কৌতুহল মিশ্রিত উৎসাহ দ্যাখা যায়।
প্রসঙ্গত এই মুহূর্তে তারাপীঠ হলো এই রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান তথা পর্যটনকেন্দ্রে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। বিশেষ কিছু দিনে ভিড় তো মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায়।স্বাভাবিক ভাবেই সারা বছর ট্রাফিকের চাপ থেকেই যায়। তার মধ্যেও শহরকে দুর্ঘটনা মুক্ত রাখার জন্য যেভাবে পুলিশ আধিকারিকরা কাজ করে যাচ্ছেন সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়।
রঞ্জিত বাবু বললেন – সবার সহযোগিতায় শহরের বুকে দুর্ঘটনা প্রায় নাই বললেই চলে। তবে এরজন্য আত্মতুষ্টির কোনো অবকাশ নাই। আমাদের পুলিশ আধিকারিকরা সদাসতর্ক আছেন। আমাদের প্রিয় শহরকে দুর্ঘটনা মুক্ত রাখার জন্য জনগণকে তিনি সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
শহরের বাসিন্দা মলয় মণ্ডল বললেন – গত কয়েকবছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জীর উদ্যোগে এবং তারাপীঠ উন্নয়ন পর্ষদের নিরলস পরিশ্রমের জন্য তীর্থস্থান তো ছিলই তারাপীঠের নাম পর্যটন মানচিত্রে উঠে এসেছে। মায়ের পায়ে পুজো দেওয়ার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে আসেন। তারপরও পুলিশ আধিকারিকরা যেভাবে শহরকে দুর্ঘটনা মুক্ত রেখেছেন তাতে কোনো প্রশংসায় যথেষ্ট নয়। প্রিয় শহর ও থানার আধিকারিকদের জন্য সত্যিই গর্ব হয়।