শুভ্রাচল চৌধুরী, বাঁকুড়াঃ- নদীর চরে হাজার হাজার মানুষ বসে মুড়ি খাচ্ছে! সঙ্গে রয়েছে চপ, সিঙারা, নাড়ু, জিলিপি, শশা, পেঁয়াজ, মটরশুঁটি, আলু সিদ্ধ । এ হল মুড়ির মেলা। ২০০ বছর ধরে বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া গ্রামের দারকেশ্বর নদীর চরে আয়োজিত হয়ে চলেছে এই উৎসব। নির্দিষ্ট করে মাঘ মাসের চতুর্থ দিন এই মুড়ি উৎসব আয়োজিত হয়।
দারকেশ্বর নদীর চরে আছে সঞ্জীবনী মাতার মন্দির। প্রতিবছর মকর সংক্রান্তির দিন সেখানে হরিনামের আসর বসে। আর নতুন মাসের চতুর্থ দিন, অর্থাৎ ৪ঠা মাঘ এখানেই আয়োজিত হয় মুড়ি উৎসব। যাতে যোগ দিতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন। প্রায় ৬০-৭০ হাজার মানুষ আসেন শুধুমাত্র মুড়ি উৎসবে অংশ নেবেন বলে। দ্বারকেশ্বর নদীর জলে মুড়ি মাখিয়ে খাওয়া হয়। যদিও এর পিছনে এক লোককথা মিশে আছে। প্রচলিত আছে ‘চুয়া’ দিয়ে, অর্থাৎ বালি খুঁড়ে দারকেশ্বর নদীর জল তুলে সেই জল দিয়ে মুড়ি মেখে খেলেই নাকি সেরে যাবে রোগব্যাধি! এই বিশ্বাস থেকেই শুরু মুড়ি মেলা উৎসবের।
শুধু বাঁকুড়া জেলা নয়, অন্যান্য জেলা থেকেও প্রতি বছর হাজার হাজার দর্শনার্থী এই মুড়ি মেলা উৎসবে যোগ দিয়ে মুড়ি খেতে আসেন। বেলার দিকে নরনারায়ণ সেবায় ঢল নামে অজস্র মানুষের। প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার মানুষ জমা হন। একসময় মানুষের এই ভিড় সামাল দেওয়া যেত না। সকলে সঞ্জীবনী মাতার ভোগ পেতেন না। তার আগেই ফুরিয়ে যেত। কিন্তু কোভিডের সময় থেকে ভিড় কিছুটা কমেছে। এই বছর আবারও জমা হয়েছেন প্রচুর মানুষ। আর তাতেই জমে ওঠেছে মুড়ি উৎসব।