সন্তোষ মণ্ডল,আসানসোলঃ- গত সাত দিন ধরে চলা অনশন আন্দোলন মঞ্চ ভাঙচুরের প্রতিবাদে ও দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ সরব হল আদিবাসী সংগঠন। ঘটনা আসানসোলের রানিগঞ্জের। প্রসঙ্গত সাঁওতালি ভাষা ও অলচিকি লিপিতে পাঠ্যক্রম চালু করার দাবিতে আদিবাসী দিশম গাঁওতা-সহ ১৫টি জনজাতি সংগঠনের নেতৃত্বে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনশন ও অবস্থান-বিক্ষোভ চলছে রানিগঞ্জের টিডিবি কলেজের সামনে। বুধবার সেই অবস্থান-অনশনের মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছেন মহরম পালনে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তাই বুধবার তাঁরা কর্মসূচি স্থগিত রেখেছিলেন। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার রানিগঞ্জ মোড় থেকে কলেজ পর্যন্ত একটি মিছিল ও তার পরে কলেজের গেটে বিক্ষোভের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। সেই উপলক্ষ্যে বুধবার বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে দুপুর নাগাদ তাঁরা খবর পান, কে বা কারা আন্দোলন মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে। এর পরেই আন্দোলনে যুক্ত সংগঠনের প্রতিনিধিরা মঞ্চের সামনে রাস্তা অবরোধ শুরু করে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের দাবি, চক্রান্ত করে তাদের মঞ্চ ভাঙা হয়েছে।
উল্লেখ্য সাঁওতালি ভাষা ও অলচিকি লিপিতে পাঠ্যক্রম চালু করার দাবিতে গত ২৭ জুন এক বিক্ষোভ মিছিল করে প্রতিবাদ কর্মসূচি করার ও অনশনে বসার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আদিবাসী ডিসমগাঁওতা সংগঠন ও ৪০টিরও বেশি আদিবাসী সংগঠনের সদস্যরা। তাঁরা জানান, ২০২৩ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষকে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এই পাঠ্যক্রম চালুর ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র এবং উচ্চ শিক্ষা দফতর পাঠ্যক্রম চালুর অনুমোদন দিয়েছে। তার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাও নিয়েছেন। কিন্তু পাঠ্যক্রম চালু করা হয়নি। যদিও আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে টিডিবি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তথা রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় তার অগোচরে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে দাবি করেন ও ব্য়ক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে এবিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। যদিও সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি আদিবাসী সংগঠনগুলি এবং তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
অন্যদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফেও এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এদিকে বিক্ষোভরত আদিবাসী সংগঠনগুলি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতী দিয়ে তাদের এই আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।