eaibanglai
Homeএই বাংলায়আসামির বিপদে জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এলেন বাঁকুড়া জেলার চার ওয়ার্ডার

আসামির বিপদে জীবন বাঁচাতে এগিয়ে এলেন বাঁকুড়া জেলার চার ওয়ার্ডার

সংবাদদাতা, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগার, আর একটু চলতি ভাষায় বাঁকুড়া জেল। সেই জেলের এক আসামির চরম বিপদে এগিয়ে এলেন জেলের চার জেল ওয়ার্ডার। আসামি বলা ভুল হবে কারণ এই ওয়ার্ডাররা জানান, সংশোধনাগারে যারা থাকেন তাদেরকে আসামির চোখে দেখেননা তারা। নিজেদের পরিবার বলে মনে করেন কারারক্ষী থেকে শুরু করে ওয়ার্ডার এবং জেলাররা। সাজাপ্রাপ্ত আসামি সুকুমার সরেন, বর্তমানে রয়েছেন বাঁকুড়া সংশোধনাগারে। হঠাৎ খবর আসে তার বাবা লাখু সরেন একটি ভয়ানক দূর্ঘটনার কবলে পড়েছেন। দুশ্চিন্তায় মাথায় হাত পড়ে যায় জেলের ভিতরে বন্দি থাকা সুকুমারের। বাবার চিকিৎসা হবে কিভাবে? কে দেখবে ? কোথায় যাবে? কিন্তু সুকুমার হয়ত ভুলে গিয়েছিলেন যে তিনি এখন একটি নতুন পরিবারের অংশ। যে পরিবারে রয়েছেন সংশোধনাগারের ওয়ার্ডার থেকে জেলার সকলে। সুকুমারের বাবা লাখুর জীবন বাঁচাতে এক মুহূর্ত চিন্তা না করেই ঝাঁপিয়ে পড়েন বাঁকুড়া সংশোধনাগারের চার ওয়ার্ডার অভিজিৎ মিশ্র, সৌমেন মন্ডল, সন্দ্বীপ নন্দী এবং প্রশান্ত ঘোষ। জীবনদায়ী চার ইউনিট রক্ত দিলেন সাজাপ্রাপ্ত আসামির বাবাকে। বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে এর চেয়ে বড় লাল সংগ্রামের উদাহরণ কিই বা হতে পারে। বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগারের কন্ট্রোলার ধ্রুবজিত চৌধুরী বলেন, “আসামি নয়, ওরা আমাদের পরিবার। তাই ওদের দুঃখে পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য।”

চার ওয়ার্ডার শোনা মাত্রই প্রস্তুত ছিলেন। নাম লিখে তারা হাজির হন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সই করে, নাম লিখিয়ে এবং ওজন করিয়ে সবরকম নিয়ম মেনে সইচ্ছায় এই কর্মযজ্ঞে অংশগ্রহণ করেন তারা। অবশেষে প্রচণ্ড মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেয়েছেন জেলে থাকা সুকুমার, এমনটাই মনে করছেন চার ওয়ার্ডার। ওয়ার্ডার অভিজিৎ মিশ্র বলেন, “খুব ভাল লাগছে এমন একটি কাজে অংশগ্রহণ করতে পেরে। যারা বন্দি রয়েছেন তারা সবার আগে একজন মানুষ এবং এই কারণেই আমরা সবসময় তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি।”

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments