সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ– মানসিক ভারসাম্যহীন যুবতীকে ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার সাজা শোনালেন আসানসোল আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ ( দ্বিতীয়) তানিয়া ঘোষ। একইসাথে নির্যাতিতাকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের ভিকটিম ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে।
সরকারি আইনজীবী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১১ জুলাই মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবতীর হঠাৎ পেটে ব্যাথা শুরু হলে তাকে তার মা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। তখন চিকিৎসক যুবতিকে পরীক্ষা করে জানান তিনি ৪/৫ মাসে অন্তঃসত্ত্বা। এরপরই নির্যাতিতার মা তাকে ভালো করে বুঝিয়ে জানতে চান তার সঙ্গে কোনো নির্যাতন হয়েছে কিনা। তখন ওই যুবতী জানান তাদের পাড়ার রবি তুড়ি ওরফে গুটু তাকে জোর করে বাড়ির অদূরে রেললাইনের পাশে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেছে। এরপরই পুরো বিষয়টি সালানপুর থানায় জানিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান নির্যাতিতার মা। অভিযোগ পেয়েই তৎপরতা দেখায় পুলিশ এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৬ নম্বর ধারায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তী কালে ওই যুবতী মৃত সন্তান প্রসব করেন। আদালতের নির্দেশে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ওই সদ্যজাতর ময়নাতদন্তের সময় রক্তের নমুনা নেওয়া হয়। একইসঙ্গে অভিযুক্ত যুবকের রক্তের নমুনা নিয়ে সদ্যজাতর রক্তের নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। তাতে মিল পাওয়া যায়। সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হয়। যা শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত যুবকের দোষ প্রমাণের পাশাপাশি সাজা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান সরকারি আইনজীবী।
আসানসোল আদালতের এই মামলার সরকারি আইনজীবী তাপস উকিল এদিন বলেন, “এই মামলা চলাকালীন আদালতে তিন চিকিৎসক সহ মোট ১৫ জন সাক্ষ্যদান করেছেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়া যুবক এখন জেলেই আছে। পুলিশ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়ায় যুবক জামিন পায়নি।”