সঙ্গীতা চ্যাটার্জী,তারকেশ্বর:- হুগলি জেলার নালিকুলের সবুজকালী মায়ের মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সিদ্ধেশ্বরী কালী, প্রতি মুহূর্তে তিনি তাঁর অস্তিত্বের প্রমান দিয়ে চলেছেন অগণিত ভক্ত বৃন্দদের। গতকালও তার অস্তিত্বের নিদর্শন পাওয়া গেলো। মা সিদ্ধেশ্বরী কালীর গায়ের রং এখানে সবুজ,কারণ তাঁর এক অঙ্গে রয়েছে কৃষ্ণ ও কালী। মায়ের এই মন্দিরে তাই বৈষ্ণব ও শাক্ত মতের বিভেদ ঘুচে এক হয়ে যায় আর মাকে চাক্ষুষ দর্শন করলেই বোঝা যায় মা জীবন্ত! সবুজ কালী মায়ের বহু অলৌকিক মহিমার কথা প্রচলিত আছে মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই।
জনশ্রুতি অনুযায়ী শোনা যায় যে, মা এই মন্দিরের আশেপাশের চত্বরে হেঁটে বেড়ান,ঘোরাঘুরি করেন। কখনো শোনা যায়, গভীর রাতে মায়ের নুপুরের শব্দ।কখনো আবার রোগশয্যায় থাকা জনৈক ভক্তকে মা নিজে গিয়ে রোগ আরোগ্যের আশ্বাস দিয়ে আসেন। ঠিক সেই রকমই একটি বিরল ঘটনার সাক্ষী হল নালিকুলের অধিকারী বাড়ি। যদিও এই ধরনের ঘটনা প্রায়শয়ই তারা দর্শন করে থাকেন তবে এবারের দৃশ্যটি বড়ই নজরকাড়া। গত ৯ ই জুন, রবিবার সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের প্রধান আহ্বায়ক শ্রীযুক্ত দেবজ্যোতি অধিকারী মায়ের মন্দিরের দরজা খোলার পর রীতিমতো চমকে ওঠেন,মায়ের কাপড়ের অবস্থা দেখে,ব্যস্ত গৃহিনী যেমন শাড়ির কুচি এক হাতে ধরে ছুটে যান এ দোর থেকে অন্য দোর, মায়ের শাড়ির অবস্থা ও এইদিন ঠিক এইরকম ছিলো।
দেবজ্যোতি অধিকারী তৎক্ষণাৎ উপস্থিত ভক্তবৃন্দের মায়ের ঘরে ডাকেন,তারাও এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে যান। দেবজ্যোতি অধিকারীর কথায়, “আজ সকালে যখন মায়ের ঘরের দরজা খোলা হয়, তখন দেখা যায় মায়ের অঙ্গে পরা শাড়িটি বড় অগোছালো, দেখে মনে হচ্ছে মা কোথাও বেড়াতে বেরিয়েছিলেন। আমাদের গ্রামে ঘরে মায়েরা যেমন শাড়ির কুচি ধরে দ্রুত পদে হাঁটেন,তেমনি মাও যেন কোন ভক্তের ডাকে সাড়া দিতে দ্রুত গতিতে ছুটে গিয়ে ছিলেন। যদিও বেশিরভাগ দিনই মায়ের শাড়ির কুচি এরকম অগোছালো থাকে, কিন্তু আজ আরও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে,তাই আমার মনে হলো মায়ের সন্তানদের বিষয়টি দেখায়।”
মায়ের এই ঘটনা কেবলমাত্র যে অলৌকিক তা নয়, বরং এই ঘটনা মায়ের জীবন্ত রূপে অবস্থান করার প্রমাণ। মায়ের এক ভক্ত নবকুমার ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন,মায়ের অপার মহিমা জীবন্ত থাকার প্রমাণ শুধু উপলব্ধি করতে হয়,তাই মাকে নিষ্পলক ভাবে দেখতেই আমার মতো ভক্তরা বারংবার ছুটে আসেন দূর দূরান্ত থেকে।