সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী),বহরমপুরঃ- ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত মা দুর্গার আগমনকে ঘিরে আমাদের মনের মধ্যে একটা আনন্দ,উত্তেজনা কাজ করে। ষষ্ঠীতে বোধন,সপ্তমীতে নবপত্রিকা স্নান,অষ্টমীতে সন্ধি পুজোর পর নবমীতে দুর্গা পুজোয় হৈ চৈ করে কেটে যায়। কিন্তু দশমী এলেই মুখ ভার হয়ে যায় সকলের! কারণ দশমীতে মায়ের বিসর্জন! আবার এক বছরের অপেক্ষা আর অপেক্ষা থেকেই প্রশ্নের সৃষ্টি! দশমীর দিন দেবী দুর্গার বিসর্জন কেন হয়? এই প্রশ্নের উত্তর অনেকের মনেই উদয় হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক এর উত্তর।
যে দেবী প্রতিমাকে এত আবেগ ও আড়ম্বরের সাথে পুজো করা হলো কেন সেই দেবী প্রতিমার বিসর্জন হয় ? তার উত্তর আছে আমাদের সনাতন শাস্ত্রেই। সনাতন ধর্মে বলা হয় যে, মনুষ্য দেহ তথা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সকল বস্তুই পঞ্চ উপাদানে তৈরি। এই পঞ্চ উপাদান হলো আকাশ,বায়ু,অগ্নি,জলও মাটি। তাই মানুষের দেহ মৃত্যুর পর আগুনে পোড়ানো হয়, আগুনে পোড়ালে দেহ পঞ্চ ভূতে মিশে যায়। মনুষ্য দেহ পঞ্চভূত থেকে সৃষ্টি হয়ে যেমন অন্তিমে আবার পঞ্চভূতে মিশে যায় প্রতিমার ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়। মাটির কাঠামোয় দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়, দেবীকে জাগ্রত করা হয় বোধনের মাধ্যমে আর তখন মাটির কাঠামো হয়ে ওঠে দেবী প্রতিমা। পুজোর শেষে দেবীর বিদায় জানানো হলে সেই প্রতিমা পুনরায় প্রাণহীন হয়ে যায় তাই সেই প্রাণহীন প্রতিমাকে আবার জলে বিসর্জন দেওয়া হয় যাতে তা পুনরায় পঞ্চ ভূতে মিশে যায়।