সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী),বহরমপুরঃ– কলিযুগে হরিনাম মহামন্ত্র জপই হলো জীবের উদ্ধারের একমাত্র পথ। আজ আপনাদের বলবো,‘হরি’ শব্দের অর্থ কী? কেনই বা কীর্তনানুষ্ঠানে, জীবনকালে, মরণকালে, শ্মাশানঘাটে সবসময় হরি বল উচ্চারিত করা হয়?
‘হরি’ অর্থাৎ যিনি আমাদের সর্বস্ব হরণ করেন,আমাদের জন্ম- মৃত্যু-জরা-ব্যাধিময় মহাদুঃখ যিনি চিরতরে হরণ করে নেন ও আমাদের সচ্চিদানন্দময় পরম গতি দান করেন, তিনিই ভগবান শ্রী হরি। সবসময় ‘হরি বল্’ বলা হয় আসলে সবাইকেই হরি নাম করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে কেন সব সময় হরিনাম বা হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করবো?
সত্য যুগে মানুষ তপস্যা করতেন, এই কঠিন তপস্যার মাধ্যমে তারা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারতেন এবং ভগবানের শ্রীচরণে আশ্রয় পেতেন। ক্রেতা যুগে মানুষ যঞ্জ করতেন, যজ্ঞ করে মানুষ পাপ থেকে মুক্ত হতেন এবং ভগবানের শ্রীচরণে আশ্রয় পেতেন। দ্বাপর যুগে মানুষ সেবা করতেন ভগবানের কিন্তু সেই সেবা কলিযুগের সেবার মত নয়। দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অধিকাংশ সময়েই তারা ভগবানের সেবায় সময় কাটাতেন। কিন্তু কলি যুগের মানুষের কাছে এত সময় নেই। কলিযুগে মানুষের অন্নগত প্রাণ, তাদের আয়ু অল্প, তাহলে তারা কীভাবে তাদের পাপ থেকে মুক্ত হবেন? কীভাবে ভগবানের চরণে আশ্রয় পাবেন? এই কথা চিন্তা করে নারায়ণের অবতার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু কলিতে আবির্ভূত হয়ে বলে ছিলেন যে, কী করলে কলি যুগের মানুষ সহজেই ভগবানের দর্শন পাবেন। তিনি বলেছিলেন “হরের নাম হরের নাম হরের নামৈব কৈবলম। কলৌ নাস্ত্যেব, নাস্ত্যেব নাস্ত্যেব গতিরন্নথা।।”-অর্থাৎ হে কলিযুগের মানুষ শুধু হরিনাম করো আর হরিনাম করো কলিযুগে হরিনাম ছাড়া আর গতি নেই।