সঙ্গীতা চৌধুরীঃ- ত্রিদেব বলতে আমরা ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর তিনজনকেই বুঝি। কিন্তু খুব অদ্ভুত রকম ভাবে ভগবান নারায়ণ ও দেবাদিদেব মহাদেবের পুজো হলেও ব্রহ্মার পূজা খুব একটা দেখা যায় না। ব্রহ্মার পুজো কেন হয় না এমন প্রশ্ন যদি আপনার মাথা থেকেও এসে থাকে তাহলে আজকের লেখাটি আপনার জন্যই। স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজকে একবার একজন এই প্রশ্ন করেছিলেন। একজন ভক্ত জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের পুজো সবজায়গায় হয়। অনেক মন্দির আছে। কিন্তু ব্রহ্মার পুজো হয় না কেন?
স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজ এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর, সৃষ্টি স্থিতি লয়। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সুস্থিত হওয়া প্রয়োজন, সাবলীল জীবন চাই। আর অর্থ সম্পদ দরকার। তাই বিষ্ণু ও তার স্ত্রী লক্ষ্মীর পুজো ও আশীর্বাদ কাম্য। সাধনার লক্ষ্য অহংয়ের নাশ, মনের লয়, মুক্তি। এজন্য শিবের পুজো। কারণ মহেশ্বর হলেন লয়ের বা প্রলয়ের দেবতা। কিন্তু ব্রহ্মা সৃষ্টির দেবতা, নতুন দেহ মনের দাতা। অথচ মানুষ চায় না আবার জন্মাতে। জগতের দুঃখ কষ্টের মধ্যে ফিরে আসতে চায়না। তাই সে ব্রহ্মার পুজো করেনা। তাঁর আশীর্বাদে পুনর্জীবন বা আবার সৃষ্ট হতে রাজি নয়। এজন্যই ব্রহ্মার পুজো মানুষ করেনা।”
আবার পুরাণ অনুযায়ী একটি ভুলের জন্য ব্রহ্মা শাপ গ্রস্থ হয়েছিলেন, যে তার পুজো করা হবে না এবং ব্রহ্মাও সেই অভিশাপ মাথা পেতে নিয়েছেন। পুরাণের সেই কাহিনী অন্যদিন বলবো আজ এই অবধিই।





