সুইটি চন্দ্র, দুর্গাপুর: বিষাক্ত রাসায়নিক মিশ্রিত জলে পড়ে মঙ্গলবার সকালে প্রাণ গেলো বহুজাতিক গ্যাস উত্তোলক সংস্থার দুই ঠিক শ্রমিকের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আরো তিন শ্রমিক।
বহুজাতিক সংস্থাটির বিরুদ্ধে লাওদোহা, কাঁকসা ব্লকের ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের তরফে ভূগর্ভ থেকে মিথেন গ্যাস উত্তোলনের সময় বিষাক্ত রাসায়নিক মিশ্রণ করার অভিযোগ বহুদিনের। এতদিন প্রশাসনকে বগলদাবা করে চলা এসার ওয়েল এন্ড গ্যাস নামের সংস্থাটি অবশ্য টা বিশেষ পাত্তাই দেইনি, তবে, এদিন তাদেরই দুই শ্রমিকের মৃত্যুতে আর পালাবার পথ পাইনি এসার।
গ্যাস দুর্ঘটনায় মৃত দুই শ্রমিকের নাম আকাশ বাদ্যকর (২৫) কাঁকসার জামবনের বাসিন্দা ও অরূপ চৌধুরী (২৬)। তার বাড়ি মালদহে। আশঙ্কাজনক আরও তিন যুবককে প্রথমে দুর্গাপুরের শোভাপুর সংলগ্ন একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ও পরে শহরেরই বিধান নগরের বেসরকারি মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক,বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়।
মঙ্গলবার সকালে অন্যান্য দিনের মতোই বহুজাতিক গ্যাস উত্তোলক সংস্থাটি স্থানীয় লাওদোহা ব্লকের পারুলিয়ার ২৪২ নম্বর কূপে কাজে যোগ দেয় ওই যুবকরা। আচমকা গ্যাস উত্তোলকের পর বর্জ্য মিশ্রিত জমা জলে পড়ে যায় পাঁচ ঠিকা শ্রমিক। সহকর্মীরা দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি তাদের উদ্ধার করে। তারপরেই তাদের স্থানীয়দের সহযোগিতায় শোভার সংলগ্ন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে আকাশ বদ্যকর ও অরূপ চৌধুরীকে বিধাননগরের বেসরকারি মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকেরা।
আরো তিন যুবক বর্তমানে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জামবনের বাসিন্দা উত্তম সিংহের অভিযোগ,”গ্যাস উত্তোলক সংস্থার গাফিলতির জেরেই আজ প্রাণ গেল দুই শ্রমিকের। আমরা কর্তৃপক্ষের শাস্তির দাবি করছি। এর আগেও একাধিকবার সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে শ্রমিকদের। ফের মৃত্যুর মুখে পড়তে হলো আমাদের পাড়ার আকাশকে ও মালদহের অরূপকে। কি কারনে এই ঘটনা ঘটলো তার জবাব দিতে হবে সংস্থার আধিকারিকদের।”উল্লেখ্য এই বেসরকারি গ্যাস উত্তোলক সংস্থার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের অভিযোগ বিস্তর। গ্যাস উত্তোলক সংস্থার নিরাপত্তা রক্ষীদের পদোন্নতি হওয়ার পরেও তাদের বেতন বাড়ানো হয় না এমনকি তাদেরকে আবার স্বপদে বহাল করে দেওয়া হয় এমন অভিযোগ উঠেছিল মাত্র কয়েকদিন আগে। বেসরকারি গ্যাস উত্তোলক সংস্থার কর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে এবার একটি বড় প্রশ্ন চিহ্নই কিন্তু দেখা দিল। সংস্থার পক্ষ থেকে মহা নিবন্ধক সোনালী ব্যানার্জি বলেন, “পুলিশ একটি তদন্ত শুরু করেছে,পাশাপাশি আমরাও আলাদাভাবে খতিয়ে দেখছি কেনো এমন হলো!”