সঙ্গীতা চ্যাটার্জী (চৌধুরী)ঃ- বন্ধুরা আপনারা যখন ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন তখন বুঝতে পারবেন যে লীলাধর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যখন দাঁড়ান তখন তিনি হাঁটুটাকে ভাঁজ করে দাঁড়ান, এই কারণে তাকে ত্রিভঙ্গ মুরারীও বলা হয়। কিন্তু বন্ধুরা কখনো কি আপনাদের মনে এই প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে যে, কেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হাঁটু ভাঁজ করে ত্রিভুজের মতো করে দাঁড়ান? এমনটা নয় তো যে ভগবানের শ্রী অঙ্গে কোথাও কোনো ব্যথা আছে বা কোনো আঘাত? হ্যাঁ, আজকে প্রতিবেদনে আমি সেই প্রশ্নেরই উত্তর দিতে চলেছি।
একবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রাধারানীর সখী বিরোজার সাথে কুঞ্জে লীলা করছিলেন। তার লীলাতে যাতে কোন ব্যাঘাত না ঘটে সেই কারণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শ্রীদামকে বলছিলেন তাঁর অনুমতি ব্যতীত কাউকেই ঘরে ঢুকতে দেবেন না। সে যেই আসুক। এইবার নারদ মুনি সেখানে এসে উপস্থিত হন, নারায়ণ নারায়ণ করতে করতে তিনি ঘরে ঢুকতে যান কিন্তু শ্রী ভগবানের আদেশ মাথায় রেখে তাকে ঘরে ঢুকতে বাধা দেন শ্রীদাম।
নারদ মুনি তখন রাধাকে গিয়ে বলেন যে, মামা মানে কৃষ্ণ বিরোজার সাথে কুঞ্জে লীলা করছেন। এই কথা শুনে রাধারানী সেখানে আসেন ও ঘরে ঢুকতে চেষ্টা করেন। কিন্তু শ্রীদাম রাধারানীকে ঢুকতে দেন না বরং তাকে ফেলে দেন। তখন রাধারানী রেগে গিয়ে শ্রীদামকে অভিশাপ দেন যে, শ্রীদাম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের থেকে দূরে চলে যাবে, দৈত্য কুলে জন্ম গ্রহণ করবে। এই অভিশাপ শুনে শ্রীদাম খুব দুঃখিত হন এবং একই সাথে রেগে যান। কারণ তিনি নিরাপরাধ ছিলেন, তিনি শুধুমাত্র ভগবানের আদেশ পালন করছিলেন। তাই শ্রীদাম রাধারানীকে অভিশাপ দিয়ে বসেন। জগতে কেউ রাধারানীকে মা বলে ডাকবে না আর রাধারানীকে ১০০ বছর কৃষ্ণ ছাড়া থাকতে হবে।
এরপর রাধারানী যখন ঘরে প্রবেশ করেন তখন লীলাধর কৃষ্ণ এবং বিরজা দুজনেই রূপ বদল করে। কৃষ্ণ সাপের রূপ ধরেন আর বিরোজা ধরেন জলের রূপ। তখন রাধা রানীও ময়ূরের রূপ ধারণ করেন। সর্পরূপ ধারণকারী ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে রাধারানী ময়ূরের রূপে ৩ জায়গায় কামড়ে দেন, এজন্যই কৃষ্ণ যখন দাঁড়ান তখন ত্রিভুজ ভাবে দাঁড়ান।