নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুরঃ- শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর এখন শিল্প নগরীর থেকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নগরীতে পরিণত হয়েছে । শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের রয়েছে বিশ্বমানের মেডিকেল কলেজ সহ অত্যাধুনিক সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল। আশেপাশের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ও ভিন রাজ্যের সহ বিভিন্ন জেলার একাধিক রোগী দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের হাসপাতাল গুলিতে আসেন চিকিৎসা করাতে। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের যে সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল গুলি রয়েছে তাদের পরিষেবাতে সন্তুষ্ট একাধিক রোগীর পরিবা। তবে প্রদীপের তলায় থাকা অন্ধকারের মত এখনো এই স্বাস্থ্য নগরী দুর্গাপুর শহরে থাকা একাধিক হাসপাতালের বিরুদ্ধে চরম গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে বারবার। এমনই অভিযোগের ভিত্তিতে চাঞ্চল্য ছড়ালো শিল্পাঞ্চলে দুর্গাপুর।
দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বেনাচিতি বাজার এলাকার ৭১ বছরের এক বৃদ্ধ নৃপেন্দ্রনাথ শ্যাম বার্ধক্য জনিত বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে কয়েকদিন আগে ভর্তি হয়েছিলেন দুর্গাপুরের বিধান নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল পরিবার বর্গকে। ঠিক দুদিন আগেই দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের সগড়ভাঙার দেশবন্ধু নগরের এক বৃদ্ধা কনক মজুমদার গুরুতর অসুস্থ হয়ে ওই বিধাননগর এর বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। গত বুধবার রাত্রে ওই হাসপাতালেই মৃত্যু হয় দুজনের । বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার দুই পরিবারের লোকজনকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় এই দুঃসংবাদ।
বৃহস্পতিবার সকালে বেনাচিতি বাজারের বাসিন্দা মৃত নৃপেন্দ্রনাথ শ্যামের দেহ নিয়ে যান তার পরিজনেরা। দুর্গাপুরের বেনাচিতি এলাকার একটি নামকরা ক্লাবে তার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় বৃদ্ধের মৃতদেহ। পরিবারের মানুষজনের অনুরোধে শেষবারের মতো তাদের পরিবারের প্রিয় সদস্যের মুখ দেখার উদ্দেশ্যে মৃতদেহের ঢাকা সরাতেই চক্ষু চড়ক গাছ হয় মৃত পরিবারের লোকজনদের। যে মৃতদেহটির তারা নিজেদের পরিজন ভেবে নিয়ে এসেছেন সেটি এক বৃদ্ধার মৃতদেহ । ক্ষোভে ফেটে পড়েন উপস্থিত সকল এলাকাবাসি ও পরিবারের লোকজন। তৎক্ষণাৎ শববাহী গাড়িতে করে মৃতদেহ ফেরত নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। এই বিষয়ে গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মৃতের পরিজনেরা।
অন্যদিকে দুর্গাপুর সগরভাঙ্গা এলাকার বৃদ্ধা কনক মজুমদারের পরিবারের লোকজনেরাও এসে পৌঁছান হাসপাতালে তাদের প্রিয়জনের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। দুই মৃত পরিবারের পরিজনদের মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। মৃতদেহ বদল হয়েছে বলে তারা অভিযোগ জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিরুদ্ধে। বিধাননগরের ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে । ওই হাসপাতালের কর্ণধার পঙ্কজ মুখোপাধ্যায় জানান, “মৃতদেহ সনাক্ত করতে ভুল হয়েছিল। মর্গের দায়িত্বে থাকা কর্মীদেরকে ইতিমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেদিকে বাড়তি নজর দেওয়া হবে বলে এদিন তিনি দুই পরিবারকে আশ্বস্ত করেন।”