জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,সুন্দরবনঃ- জলে কুমির ডাঙায় বাঘ – এটাই হলো সুন্দরবন এলাকার জীবনযাত্রার দিনলিপি। মাঝে মাঝে আয়লা বা ইয়াসের মত বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয় ওদের জীবনকে তছনছ করে দেয়। এছাড়া অন্যান্য সমস্যা তো আছেই। আয়ের স্হায়ী উৎস সেরকমও নাই। ফলে আর্থিক দুর্দশা থেকেই থাকে। মূল ভূখণ্ড থেকে দূরে থাকলেও দুর্গাপুজোর সময় আনন্দে মেতে উঠতে ওরা ভুল করেনা।
প্রতিবছরের মত এবছরও সুন্দরবনের বিরিঞ্চিবাড়ি পার্বতীপুর বাগেরঘেরী, বসিরাম বাজার, বসিরাম নিবতলা নতুন বাজার সহ প্রায় সাতটি পাড়ায় হচ্ছে দুর্গাপুজো। প্রতিটি সুসজ্জিত মণ্ডপ সেজে উঠেছে আলোর মালায়। মণ্ডপে মণ্ডপে থিমের ছড়াছড়ি। প্রতিটি পুজো পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করে গ্যাছে – কোনোটা ৭৮, ৭৩ বা ৫৬ বছর। বৃষ্টি আনন্দের মাঝে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়ালেও একটু থামলেই প্যাণ্ডেলে প্যাণ্ডেলে ভিড় উপচে পড়ছে। কেউ কেউ নিজস্বী তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।
পুজোর চারদিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। তাতে পাড়ার ছেলেমেয়েরা অংশগ্রহণ করে। তবে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় এবছর কার্যত সেটা বন্ধ। এলাকার অন্যতম বাসিন্দা নীহার মণ্ডল বললেন – এখানকার বাস্তব পরিস্থিতি হয়তো রাজ্যের অন্যান্য এলাকার মানুষের কাছে অজানা। আমরা সত্যিই খুবই কষ্টের মধ্যে থাকি। কিন্তু পুজোর সময় আমরা সারাবছরের কষ্ট ভুলে যাই। সবাই একসঙ্গে আনন্দে মেতে উঠি। কচিকাচাদের আনন্দ দেখে আমাদের খুব ভাল লাগে। অন্যান্য সময় মানুষ এখানে বেড়াতে আসে। আমরা চাই পুজোর সময় অন্য এলাকার বাসিন্দারা এখানে আসুক।