নিজস্ব সংবাদদাতা,সিউড়ি- শিক্ষাদান যেখানে আনন্দপূর্ণ ,সেখানেই শিক্ষা স্বয়ংসম্পূর্ণ। এমনই ভাবাদর্শ নিয়ে পাঠদান করার লক্ষ্যেই বীরভূম জেলার সিউড়িতে গড়ে উঠেছে প্রভাত জ্যোতির্ময়ী জ্ঞানপীঠ। যেখানে একজন শিশু প্রাক-প্রাথমিক স্তরে পড়াশুনা শুরু করে গ্রাজুয়েশন ও বি.এড শেষ করে বেরোতে পারবে। এরকম প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ রাজ্যে খুব কম প্রতিষ্ঠানেই আছে।
পড়ুয়াদের শারীরিক মানসিক ও বৌদ্ধিক উন্নতি সাধনের উদ্দেশ্য ও আদর্শকে সামনে রেখে সারা বছর নানা বয়সের পড়ুয়াদের জন্য বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকেন এই কলেজ কর্তৃপক্ষ। সেরকমই সম্প্রতি ছোট থেকে বড় নানা বয়সী পড়ুয়াদের নিয়ে জেলা ব্যাপী বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল প্রভাত জ্যোতির্ময়ী কলেজের পক্ষ থেকে। এদিন প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সাফল্যের সঙ্গে জাঁকজমক ভাবে পালিত হলো প্রভাত জ্যোতির্ময়ী কলেজ প্রাঙ্গনে।
দুটি অর্ধে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। প্রথম অর্ধে দুটি বিভাগ গ্রুপ এ ও বি বিভাগের ফলাফল ঘোষণার সাথে সাথে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। আর দ্বিতীয়ার্দ্ধে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় গ্রুপ সি, ডি ও ই বিভাগের। দুই পর্বেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রতিযোগীতায় প্রথম তিন স্থানাধিকারীর হাতে সুদৃশ্য স্মারক,মেডেল ও শংসাপত্র তুলে দেন কলেজের কর্ণধার ও সম্পাদক লছমন বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের উৎসাহ দিতে প্রত্যেকের হাতেই তুলে দেওয়া হয় শংসাপত্র ও সম্মাননা মেডেল।
এদিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি তথা প্রথম অর্ধের পুরো অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিশিষ্ঠ রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক ডঃ কল্যাণ ভট্টাচার্য। আর দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশিষ্ঠ শিক্ষক ও বাচিক শিল্পী বরুণ দাস। শিক্ষার্থীদের শুধু পুঁথিগত বিদ্যায় নয়, তার পাশাপাশি নৈতিক, বৌদ্ধিক, সামাজিক, মানসিক বিকাশসহ পরিপূর্ণ শিক্ষা দানের লক্ষ্যে কিভাবে এগিয়ে যেতে হবে সেই কথা উঠে আসে ডঃ কল্যাণ ভট্টাচার্য ও কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ অমিয়তোষ ঘোষ ও শিক্ষিকা অনুসুয়া দাসের বক্তৃতায়। ছোটদের মোবাইলে আসক্তি কমানো,তাদের খেলার মাঠে নিয়ে যাওয়া,শ্রেণীকক্ষের গন্ডির বাইরে বেরিয়ে বাচ্চাদের মা ঠাকুমার বলা রূপকথার গল্প সহ অন্যান্য গল্পের বইমুখী করার কথাও ধরা পরে ওনাদের বক্তব্যে। এছাড়াও তাদের মানসিক স্থিতি বাড়ানোর জন্য ভিডিও প্রদর্শনীর মাধ্যমে মূল্যবান পরামর্শ দেন যোগবিভাগে পারদর্শী শিক্ষিকা টুম্পা দাস । অন্যদিকে কলেজের কর্ণধার ও সম্পাদক লছমন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে টমাস আলভা এডিসনের জীবনীকথা তুলে ধরে অভিভাবকদের উদ্দেশ্য বলেন, ” সকল মা বাবা অভিভাবকে ছোটদের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আদর্শ ও দায়িত্ব সম্পন্ন হতে হবে।”
এদিনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কলেজের কর্ণধার ও সম্পাদক লছমন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এদিনের দুটি অর্ধের অনুষ্ঠানই সাফল্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কানায় কানায় প্রেক্ষাগৃহের পূর্ণতাই তার প্রমান দিয়েছে। তাঁর মতে যে লক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল তা চূড়ান্ত ভাবেই সফল হয়েছে।