নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়া : লোকসভা ভোটের পর গেরুয়া শিবিরে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল, তা ভয় দেখিয়েই হোক বা স্বইচ্ছায়। তবে আবারো দলের কর্মীরা ফের ঘরে ফিরছেন। রিতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরের কাছে। ফের গ্রাম পঞ্চায়েত পূনঃরুদ্ধার করলো তৃণমূল। শুক্রবার বাঁকুড়ার ওন্দার কল্যাণীতে এক জনসভায় ঐ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রীণা শর্ম্মা সহ পাঁচ সদস্য বিজেপি ছেড়ে আবারো তৃণমূলে ফিরে এলেন। নয় সদস্যের এই পঞ্চায়েতের ছয় সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে পাঁচ জন এদিন ফের দলে যোগ দেওয়ায় উল্লসিত তৃণমূল শিবির। একই সঙ্গে বিজেপিতে যাওয়া চুড়ামনিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সদস্যও ফের তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা ভোটে জেলার দু’টি কেন্দ্রই হাতছাড়া হয় শাসক শিবিরের। তার প্রভাব পড়তে থাকে পঞ্চায়েত স্তরে। বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি ও বিধায়ক অরুপ খাঁ এর ‘গড়’ হিসেবে পরিচিত ওন্দা ব্লক এলাকার শাসক দলের হাতে থাকা বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান-উপপ্রধান সহ সদস্যরা যোগ দেন পদ্ম শিবিরে। এই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই সেই সব পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে নেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হয় ঘাস ফুল শিবির। ‘কেউ ভয় দেখায়নি, তবে পরিস্থিতির চাপে পড়ে’ তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন দাবী করে এদিন কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রীণা শর্ম্মা বলেন, দিদির উন্নয়নের কথা ভেবেই আবারো পুরাণো দলে ফিরে এলাম। এখন তিনি বুঝতে পারছেন তার পিছনে অনেকেই আছেন। ফের তৃণমূলে ফিরতে পেরে তিনি খুশি বলেই জানান।তৃণমূলের প্রাক্তন বাঁকুড়া জেলা সভাপতি ও ওন্দা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক অরুপ খাঁ বলেন, এই পঞ্চায়েত আমাদের দখলেই ছিল। ভয় ভীতির কারণে এই পঞ্চায়েতের সদস্যরা বিজেপিতে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এর আগে বিজেপি দখল নেওয়া কাঁটাবাড়ি ও নাকাইজুড়ি আমাদের দখলে এসেছে। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এরা সবার গ্রাম বাংলার কাজ করার জন্য নিজেদের ঘরে ফিরছেন বলেও তিনি জানান।দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরাও বিজেপি এই পঞ্চায়েত সদস্যদের মধ্যে ছ’জনকে সন্ত্রাস ও ভয় দেখিয়ে তাদের দলে যোগ দিতে বাধ্য করেছিল দাবী করে বলেন, এদের মধ্যে প্রধান সহ পাঁচ জন আজ তৃণমূল পরিবারে ফিরে এলেন। এবার ও কল্যাণী চুড়ামনিপুর দুই গ্রাম পঞ্চায়েতই তৃণমূল পরিচালনা করবে বলে তিনি জানান। বিজেপি বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার পর্যবেক্ষক পার্থ সারথি কুন্ডু জানান বিভিন্ন পঞ্চায়েতে পুলিশি সন্ত্রাস দেখিয়ে এবং এলাকায় ভয় সৃষ্টি করে পুরনো তৃণমূল কর্মীদের তারা বিজেপি থেকে তৃণমূলে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। এলাকায় পুলিশ তৃণমূলের হয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। তবে তৃণমূল নিজেদের ঘর গুছিয়ে নিচ্ছেন কেননা সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই যেখানে ফাঁকফোকর রয়েছে তা পুনরায় ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন। এক ইঞ্চিও জমি বিরোধীদের জন্য ছাড়তে তারা রাজি নন।