জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, মঙ্গলকোট, পূর্ব বর্ধমান:- গত কয়েক বছর ধরে বেপরোয়া বৃক্ষচ্ছেদন জনিত কারণে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা যথেষ্ট বেড়ে গেছে। ধীরে ধীরে মানুষের সহ্য ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে তাপমাত্রা। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রার এই বৃদ্ধিজনিত কারণে অনেক জীবের অস্তিত্ব আজ বিলুপ্তির পথে। মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাচ্ছে। বাড়ছে সমুদ্রের জল তলের মাত্রা। অনেক জনপদের সলিল সমাধি ঘটার আশঙ্কা দিয়েছে। পরিবেশবিদদের মতে এর হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় বৃক্ষরোপণ। তাদের সতর্কবাণী মাথায় রেখে অনেক সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছে বৃক্ষরোপণে। এদের অন্যতম হলো গণপুর উচ্চ বিদ্যালয় (উঃমাঃ)।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুর্গাপ্রসন্ন গোস্বামীর অনুপ্রেরণায়, সহ শিক্ষক দিব্যেন্দু ঘোষ ও বাদশা পালের উদ্যোগে এবং শিক্ষক কার্তিক মণ্ডল, রাজকুমার পাল, সুকান্ত পাল, তারক দাস বৈরাগ্য, বংশধর ঘোষ, প্রবীর মূর্মূসহ অন্যান্য শিক্ষকদের সক্রিয় সহযোগিতায় ২৬ শে জুলাই মঙ্গলকোটের গণপুর উচ্চ বিদ্যালয় (উঃমাঃ)-এ পালিত হলো বৃক্ষরোপণ উৎসব। তারই অঙ্গ হিসাবে বিদ্যালয়ের ফুটবল ময়দানের চারপাশে মেহগনি, সোনাঝুড়ি, কদম্ব, বট, আমলকী ইত্যাদি প্রজাতির ৫০ টির বেশি বৃক্ষের চারারোপণ করা হয় এবং গোবাদি পশুর হাত থেকে সেগুলি রক্ষা করার জন্য বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, চারাগাছগুলি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পৃথকভাবে বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের ভিতরেও বেশ কয়েকটি পেয়ারা, কাঁঠাল বৃক্ষের চারারোপণ করা হয়। একইসঙ্গে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর হাতে কয়েকটি চারা দিয়ে তাদের বাড়ির আশেপাশের ফাঁকা জায়গায় সেগুলি রোপণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। জানা যাচ্ছে যেসব শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা সবচেয়ে ভালভাবে গাছের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের পুরস্কৃত করা হবে।
চারারোপণের সময় প্রবল উৎসাহে শিক্ষকদের সঙ্গে রিণি, বৈশাখী, মনীষা, হৈমন্তী, জেসমিনা, আশা, রাণী, মর্শিদা, ঋক, আকাশ, লিসা প্রমুখ ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়।
প্রধান শিক্ষক বললেন – সবুজায়ন ও ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আশাকরি এই কর্মসূচির ফলে আগামী প্রজন্ম যথেষ্ট উপকৃত হবে। চারাগাছগুলি যাতে নষ্ট না হয়ে যায় সেদিকে নজর দেওয়ার জন্য তিনি সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেন।
গণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হলদিয়ার অরিন্দম দাস বললেন – এইভাবে যদি প্রতিটি বিদ্যালয় বৃক্ষরোপণে ও সেগুলি রক্ষা করার কাজে এগিয়ে আসে তাহলে শীঘ্রই প্রকৃতি আবার সবুজে ভরে উঠবে। আগামী প্রজন্ম দূষণ মুক্ত পৃথিবী পাবে।
প্রসঙ্গত অরিন্দম বাবুর সংস্থা ‘জন গণ মন’ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট বর্ষা মরশুমে রাজ্যজুড়ে কমপক্ষে দশ লক্ষ বৃক্ষরোপণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে কাজ শুরু করেছে।