eaibanglai
Homeএই বাংলায়রাজু ঝা কে খুনের দুদিন আগে নীল গাড়ি কেন গেল বীরভূমের পথে...

রাজু ঝা কে খুনের দুদিন আগে নীল গাড়ি কেন গেল বীরভূমের পথে ? নথি পেল তদন্তকারীরা

মনোজ সিংহ, দুর্গাপুরঃ কয়লামাফিয়া রাজু ঝা খুনে এবার কি তবে বীরভূম যোগ? এই প্রশ্ন রীতিমত ভাবিয়ে তুলেছে তদন্তকারীদের। সূত্রের খবর ১ এপ্রিল যে নীল ব্যালেনো গাড়িতে এসে খুনীরা বর্ধমানের শক্তিগড় থানার আমড়াবাজার এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির ভিতরেই রাজু ঝাকে খুন করে, সেই নীল গাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া একটি চাঁদার রশিদ এবং প্রথম খুনীর আচরণই তদন্তে কিছু নতুন সূত্র যোগ করেছে, যা এখন সিটের সদস্যদের চিন্তা বাড়িয়েছে।

রাজু ঝা খুন হন ১ এপ্রিল রাত্রি প্রায় পৌনে আটটা নাগাদ। এরপরই খুনীরা ওই নীল গাড়িটি নিয়ে চম্পট দেয়। পরে গাড়িটিকে শক্তিগড় থানার অদূরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশ উদ্ধার করে। আর ওই গাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে গাড়ির সিটের সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে একটি কালীপূজোর চাঁদার ১০ টাকার কুপন। জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া ওই নীল কুপনে লেখা রয়েছে সেখপুর কালীমন্দিরের পুজোর কুপন। এই সেখপুর বীরভূমের বোলপুর থেকে রামপুরহাট যাবার পথেই পড়ে। চাঁদার কুপনের তারিখ ২৯ মার্চ। অর্থাৎ, রাজুকে খুনের দুদিন আগেই এই নীল গাড়িটি বীরভূমের পথে গেছিল। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে এই গাড়ি কেন বীরভূমের পথে? এর উত্তরে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে রামপুরহাটের এই পথ দিয়েই নলহাটি হয়ে বিহারে যাওয়া যায়।

সম্ভাবনা ১ – খুনীরা এই পথ দিয়েই বিহার বা ঝাড়খণ্ড থেকে এসে থাকতে পারে।

সম্ভাবনা ২ – হাজারীবাগে বন্দি কুখ্যাত গ্যাংস্টার আমন সিং-এর কাজের ধরণ এটাই যে, সে অনেক সময় তার গ্যাংয়ের সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় এলাকার শ্যুটারদেরও সামিল করে। তাহলে কি রাজু ঝাকে খুন করতে বীরভূম থেকে খুনীদের নিয়ে আসা হয়েছিল ? আর সেই স্থানীয় দুষ্কৃতীদের আনতেই কি নীল গাড়ি বীরভূমের পথে গেছিল ?

সম্ভাবনা ৩ – আমন সিং-য়ের কাজের ধরণের মধ্যেই রয়েছে গুলি বন্দুকের সাথে বোমার ব্যবস্থা রাখা। কেবলমাত্র বন্দুক (রিভলবার, পিস্তল) নয়, তার সঙ্গে সে ব্যবহার করে বোমাও। যে বোমা রামপুরহাটের পাশ্বর্বতী এলাকায় সহজেই পাওয়া যায় বলে জানত আমন সিং। বিহার বা ঝাড়খণ্ড থেকে বোমা গাড়িতে নিয়ে আসা অনেক বেশি ঝুঁকিপুর্ণ হতে পারে বলেই কি অপারেশনের আগে কাছাকাছি জায়গা থেকে এই বোমা সংগ্রহের জন্যই নীল বোলেনো বীরভূমে যায় – সবটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারী সিটের সদস্যদের। এক্ষেত্রে, আরও একটি বিষয় নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে চাইছেন তদন্তকারীরা বলে মনে করা হচ্ছে – রাজু ঝাকে প্রথম যে খুনীকে ভিডিও ফুটেজে গুলি করতে দেখা গেছে তার পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ঘটনার মূহূর্তের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হলুদ জামা পরা একজন প্রথমে দু রাউণ্ড গুলি করে, গাড়ির সামনে চলে যায়। ফের ফিরে আসে এবং আবার গুলি চালায়। এরপর সে ধীর পায়ে চলে যাবার সময় তার হাত থেকে পড়ে যায় আগ্নেয়াস্ত্র মাটিতে। তা কুড়িয়ে নিয়ে সে নীল বোলেনো গাড়ির পিছনের দরজা খুলে গাড়িতে উঠে পড়ে। আর এই গোটা ঘটনা থেকেই মনে করা হচ্ছে খুনীরা আমন সিং-এর সরাসরি গ্যাংয়ের প্রশিক্ষিত সদস্য না হবার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, কখনই প্রশিক্ষিত শ্যুটাররা দ্বিতীয়বার গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করার এই ঝুঁকি নেয় না। এমনকি তাদের হাত থেকে এভাবে আগ্নেয়াস্ত্র পড়ে যাবার মত ঘটনাও বিরল।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments