eaibanglai
Homeএই বাংলায়যোগিনী একাদশীর ব্রতকথা শ্রবনেও ভয়াবহ পাপ ক্ষয়

যোগিনী একাদশীর ব্রতকথা শ্রবনেও ভয়াবহ পাপ ক্ষয়

সঙ্গীতা চ্যাটার্জী, তারকেশ্বর:- আজ পবিত্র যোগিনী একাদশী। এই যোগিনী একাদশীর মাহাত্ম্য কথা শ্রবণ করুন,কারণ মহাপাপ নাশকারী এই পবিত্র একাদশীর ব্রত কথা শ্রবণ করলে মুহূর্তেই সকল পাপ বিনষ্ট হয়ে যায়। এই ব্রত পালনকারীদের পক্ষে এই ব্রতটি সর্বশ্রেষ্ঠ ব্রত হিসেবেই পরিচিত। এই ব্রত কথায় বলা হয় যে, অনেক আগে অলকা নগরে শিবভক্ত এক রাজা ছিলো, তার নাম ছিলো কুবের, এই কুবেরের হেমমালী নামের এক মালী ছিলো,সে প্রতিদিন শিব পুজো করার জন্য মানস সরোবর থেকে ফুল তুলে যক্ষরাজ কুবেরকে দিতো। বিশালাক্ষী নামে হেমমালীর অত্যন্ত সুন্দরী রূপবতী এক পত্নী ছিলো। সে তার সেই সুন্দরী স্ত্রীর প্রতি অত্যন্ত আসক্ত ছিলো।

একদিন সে তার স্ত্রীর প্রতি কামাসক্ত হয়ে রাজ ভবনে যাওয়ার কথাও ভুলে গেলো। বেলা দুই প্রহর হয়ে গেলে অর্চনের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে দেখে রাজা ক্রুদ্ধ হয়ে মালীর বিলম্বের কারণ অনুসন্ধান করে একজন দূতকে পাঠালেন। দূত তখন তার স্ত্রী সাথে তার আনন্দে মত্ত হওয়ার কথা জানালে কুবের অত্যন্ত রেগে তখনই মালীকে তার সামনে হাজির করতে আদেশ দিলেন। ওদিকে দেরি হয়ে যাওয়ায় স্নান না করেই সে রাজার কাছে উপস্থিত হয় তার তাকে দেখা মাত্রই রাজা রেগে তাকে অভিশাপ দিলেন যে সে শ্বেতকুষ্ঠগ্রস্ত হবে এবং প্রিয়তমা ভার্যার সাথে তার চিরবিয়োগ সংগঠিত হবে। এই স্থান থেকে ভ্রষ্ট হয়ে অধঃগতি লাভ হবে। কুবেরের এই অভিশাপে হেমমালী পত্নীর সাথে স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে দীর্ঘকাল যাবৎ কুষ্ঠ রোগ ভোগ করতে লাগলো।

দীর্ঘদিন ধরে মহাদেবের পুজো অর্চনা করার ফুল সংগ্রহ করার সুকৃতি বলে সে শাপগ্রস্ত হয়েও বৈষ্ণবশ্রেষ্ঠ শিবের বিস্মরণ কখনও হয়নি। একদিন হেমমালী ভ্রমণ করতে করতে হিমালয়ে শ্রীমার্কণ্ডেয় ঋষির আশ্রমে উপস্থিত হয় ও কুষ্ঠরোগে পীড়িত সপত্নী হেমমালীকে দর্শন করে শ্রীমার্কণ্ডেয় তাকে তার এই অবস্থার কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে সব কথা জানিয়ে ক্ষমা চায়। তারপর মার্কণ্ডেয় মুনি তাকে আষাঢ় মাসের কৃষ্ণপক্ষের ‘যোগিনী’ নামক একাদশী ব্রত পালন করতে বললেন। ঋষির উপদেশ শ্রবণ করে হেমমালী তাকে প্রণাম জানালো। পরে অত্যন্ত আনন্দে ঋষির আদেশমতো নিষ্ঠার সঙ্গে যোগিনী একাদশী ব্রত পালন করল। এইভাবে হেমমালী সমস্ত রোগ থেকে মুক্ত হলো ও স্ত্রীর সাথে সুখে জীবন যাপন করতে লাগলো।

এই ব্রত পালনের ফল স্বরূপ বলা হয়ে থাকে যে, এই ব্রত পালন করলে ৮৮ হাজার ব্রাহ্মণকে ভোজন করানোর ফল লাভ হয়। যে ব্যক্তি এই মহাপাপ বিনাশকারী ও পুণ্যফল প্রদায়ী যোগিনী একাদশীর কথা পাঠ ও ভক্তি সহকারে শ্রবণ করে সে অচিরেই সর্বপাপ থেকে মুক্ত হয়।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments