জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গণপুর, পূর্ব বর্ধমান:- পূর্ব বর্ধমানের পশ্চিম মঙ্গলকোটের গণপুর গ্রামে প্রায় সমস্ত উৎসব যথেষ্ট ধুমধাম সহকারে পালিত হয়। তবে গত কয়েক বছর ধরে রঙের উৎসব দোল যে উচ্চতায় পৌঁছে গেছে তাতে মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত এটাই হয়তো গণপুরের শ্রেষ্ঠ উৎসব হয়ে উঠবে।
কিছুক্ষণের জন্য নিজেদের সামাজিক অবস্থান ভুলে সাধক শ্রী শ্রী সীতারামদাস ওঙ্কারনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত ‘আনন্দমঠ’ আশ্রমে মনের খুশিতে রঙের উৎসব দোলের আনন্দে মেতে উঠল পশ্চিম মঙ্গলকোটের গণপুর গ্রামের বাসিন্দারা। আট থেকে আশি – কচিকাচা থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, গৃহবধূ থেকে শুরু করে বাড়ির মেয়েরা – সবাই এই আনন্দোৎসবে সামিল হয় এবং সবার মিলিত উপস্থিতিতে দোলের উৎসব সত্যিকারের রঙিন হয়ে ওঠে।
উৎসব উপলক্ষ্যে গত ২৪ শে মার্চ সন্ধ্যে থেকে মন্দির চত্বরে শুরু হয় নাম-সংকীর্তন এবং ২৫ শে মার্চ সারাদিন ব্যাপী সেটি চলে। গ্রামবাসীদের আগমনে মন্দির চত্বর গমগম করে ওঠে। দুপুরে হয় নরনারায়ণ সেবা। পরে গ্রামবাসীরা গ্রাম পরিক্রমায় বের হয়। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত শ্রেণীর মানুষকে গ্রাম পরিক্রমায় পা-মেলাতে দেখা যায়। পরস্পরকে আবির মাখিয়ে রঙিন করে নাচতে নাচতে সকলে আনন্দে মেতে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে সব ভেদাভেদ দূর হয়ে উৎসব সত্যিকারের সার্বজনীন হয়ে ওঠে।
দোল উপলক্ষ্যে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি আত্মীয় স্বজনে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। দোলের আনন্দ উপভোগ করার জন্য পাড়ার মেয়েরা শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে এসেছে যেটা সাধারণত দুর্গা পুজোর সময় দেখা যায়। সব মিলিয়ে এক জমজমাট পরিবেশ।
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/03/holiasharam1-1024x576.gif)
শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে আসা তনয়ার বক্তব্য – দোলকে কেন্দ্র করে অন্যান্য বন্ধুরা বাপের বাড়ি এসেছে। আবার সবাই আনন্দ করব। এই সুযোগ কি ছাড়া যায়।
গ্রামের অন্যতম প্রবীণ ব্যক্তি তথা ওঙ্কারনাথের শিষ্য রামজীবন ভট্টাচার্য্য বললেন- ঠাকুরের লক্ষ্য ছিল জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মিলনের মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নেওয়া। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তিনি এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। তাই ঠাকুরের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে আর যেন এই মিলন উৎসব বন্ধ না হয়। গ্রামবাসীদের কাছে তার আবেদন ছোট করে হলেও ভবিষ্যতেও এই মিলন উৎসব যেন চালিয়ে যাওয়া হয়। তাহলে সেই মহান মানুষটির ইচ্ছেকে মর্যাদা দেওয়া হবে।
একই কথা বললেন আশ্রমের বর্তমান সেবাইত কনকনাথ ব্যানার্জ্জী ও রমা ব্যানার্জ্জী। তাদেরও ইচ্ছে প্রতি বছর যেন এই উৎসব হয়। রমা দেবীর বক্তব্য – আমার যা আর্থিক ক্ষমতা তাতে আমার পক্ষে উৎসব করা সম্ভব নয়। তবে যেভাবে গ্রামবাসীরা এগিয়ে এসেছে তাতে ব্যানার্জ্জী বাড়ির বধূ হিসাবে আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নীলকুমার, উদয়, তাপস, নগন, সুদেব, সাহেব, শিউলি, পাপিয়া, অর্ণবী, অনিমেষ প্রমুখের কাছে। মূলত তাদের উদ্যোগেই এই উৎসবটি আয়োজন করা সম্ভব হলো। অবশ্যই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সমগ্র গ্রামবাসী।
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/03/add-01-sanaka-2-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/03/addnew-bidhan-1-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/03/add-03-ojashotel-1-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/03/add-04-avishkar-1-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/03/add-05-astor-1-1024x576.gif)
![](https://eaibanglai.com/wp-content/uploads/2024/03/add-06-govindo-1-1024x576.gif)