নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত মহিলা জুনিয়র চিকিৎসককে ধর্ষন ও খুনের ঘটনায় সারা দেশ ও রাজ্যের সাথে সাথে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলেও। প্রতিবাদ জানাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন সহ নানান কর্মসূচি পালন করে চলেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন।
মঙ্গলবার আরজিকর কাণ্ডে মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শহরের পথে নেমে সরব হয় বিজেপি। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে বাসস্ট্যান্ড প্রবেশের মূল পথ অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় বিজেপির নেতা কর্মী সমর্থকরা। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুইয়ের নেতৃত্বে চলে এই বিক্ষোভ। এই অবরোধের জেরে প্রায় আধঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
এদিন বিধায়ক লক্ষণ ঘড়ুই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে, স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ও কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই ঘটনার সাথে শুধু সিভিক ভলেন্টিয়ারই জড়িত নয় এর সাথে আরও অনেকে জড়িত আছে। তাদের সকলকে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং কঠোর শাস্তি দিতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।”
অন্যদিকে দুর্গাপুরের একাধিক সরকারি,বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা এবং মেডিক্যাল পড়ুয়ারা এদিন দুর্গাপুরের সিটিসেন্টার থেকে প্রতিবাদ মিছিল করেন। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা এবং এই কাণ্ডে যারা প্রকৃত দোষী তাদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান সকলে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ দেবারতি বর্ধন বলেন, “আমাদের সহকর্মীকে যেভাবে নিশংস ভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তা ভারতবর্ষের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা। পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে চিকিৎসকদের ওপর হামলা মারধরের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আরজি কর মেডিকেল কলেজের নির্মম ঘটনার সাথে যারা যুক্ত তাদের সকলকেই গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।”
এছাড়া দুর্গাপুরের শোভাপুর সংলগ্ন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা এবং পড়ুয়ারাও এদিন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখান। মেডিক্যাল পড়ুয়া এবং চিকিৎসকরা জানান, তাদের আইন ও বিচারের উপর ভরসা আছে। দ্রুত এই ঘটনার সাথে যারা যুক্ত তাদের সকলের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রসঙ্গত গত ৯ আগস্ট আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের এক দ্বিতীয় বর্ষের ট্রেনি চিকিৎসককে চারতলার সেমিনার হলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তে জানা যায় চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষন করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারপর থেকে উত্তাল হয়ে উঠে সারা দেশ।