eaibanglai
Homeএই বাংলায়এবার বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ পেতে চলেছে জি আই তকমা

এবার বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ পেতে চলেছে জি আই তকমা

শুভ্রাচল চৌধুরী, বাঁকুড়া:- বাঁকুড়া জেলার বাঁকুড়া দুর্গাপুর রাজ্য সড়কের উপর ছোট্ট জনপদ বেলিয়াতোড়। এই বেলিয়াতোড়েই জন্মেছিলেন বিশ্ব বিখ্যাত ভাস্কর্য শিল্পী যামিনী রায়। এছাড়াও বেলিয়াতোড়ের আরও একটা অন্য পরিচয় রয়েছে, এখানেই জন্ম বিখ্যাত মেচা সন্দেশের। কলকাতার রসগোল্লা, জয়নগরের মোয়া, জনাই এর মনোহরা, শক্তিগড়ের ল্যাংচা যেমন বিখ্যাত ঠিক তেমনই বিখ্যাত বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের মেচা সন্দেশ। আর সেই মেচাই এবার ইন্ডিজেনাস শিল্পকর্ম হিসাবে জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন ট্যাগ পেতে চলেছে।

সম্প্রতি ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ্ জুরিডিক্যাল সাইন্সে জি আই তকমার আবেদন জানান বেলিয়াতোড়ের মেচা ব্যবসায়ীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে শুরু হয় মাপকাঠিতে মেচাকে রেখে চুলচেরা খুঁটিনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার। এমন দুটি ধাপ ডিঙিয়ে ম্যাচা এখন তৃতীয় তথা শেষ ধাপে। তৃতীয় ধাপ পাশ করলেই মিলবে জি আই স্বীকৃতি। আশায় বুক বেঁধেছেন মেচা ব্যবসায়িরাও, খুশির হাওয়া বেলিয়াতোড়ে।

এই মিষ্টি তৈরি করা একেবারেই সহজ কাজ নয়। কারণ মেচা তৈরি করতে যেমন লাগে অনেক সময়, তেমনই লাগে পরিশ্রম। প্রথমে বুটের বেসন ঘিয়ে ভালো করে ভাজতে হয়। তাকে আবার মেশিনে গুড়া করে তার সঙ্গে খোয়া ক্ষীর ছানা চিনি পরিমান মতো এলাচ গুঁড়ো দিয়ে মিশিয়ে বানানো হয় মন্ড। সেই মন্ড তৈরি করে রেখে দেওয়া হয় ২৪ ঘন্টা। তারপর মন্ড কিছুটা শক্ত হয়ে এলে তাকে গোল্লা পাঁকিয়ে, আগে থেকে তৈরি করে রাখা চিনির সিরাপে ফেলে দেওয়া হয়। রস থেকে এক একটি লাড্ডু সবধানে তুলে রাখা হয় শালপাতায়। কিছুক্ষণ শুকিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে গেল মেচা সন্দেস। এক একটি মেচার দাম প্রায় ১০ টাকা। আর কাজু কিসমিস দেওয়া মেচা নিতে হলে আপনাকে দাম দিতে হবে কুড়ি টাকা। বর্তমানে বেলিয়াতোড়ে ১৫ থেকে ২০ টি পরিবার রয়েছেন যারা ছয় থেকে সাত পুরুষ ধরে বিশেষ ধরনের এই মিষ্টি প্রস্তুত করতে দক্ষ। এলাকার মেচামহল, আসল মেচা, আদি মেচা, নব মেচা মহল সহ প্রায় ৩০ টি দোকানে এই বিখ্যাত মিষ্টি পাওয়া যায়। তবে মেচার জনক কে তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও মেচার ইতিহাস প্রায় দু’শো বছর পুরানো।

ওপরে চিনির শক্ত আবরণ কিন্তু কামড় দিলেই ভিতরে নরম তুলতুলে, মুখে দিলেই মিলিয়ে যায় জ্বিভের কোন গহ্বরে মালুম পাওয়া যায় না। স্বাদ ও গন্ধে উৎকৃষ্ট মানের এই মেচা সন্দেশ। পাশাপাশি মেচা সন্দেশ টাটকা থাকে বহুদিন আর তাই এই ম্যাচা সন্দেশ কিনতে বেলিয়াতোড়ে ভিড় জমান প্রচুর মানুষ। পর্যটন মরশুমে মেচার চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ, সরবরাহ দিতে হিমশিম খান ব্যবসায়ীরা। আর তাই এই মিষ্টি আজ পর্যটকদের হাত ধরে বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতের গণ্ডি পেরিয়ে বিমান চড়ে পাড়ি দিচ্ছে সুদূর আমেরিকাতেও, দাবি মেচা ব্যবসায়ীদের।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments