সংবাদদাতা,আসানসোলঃ– চার দিনের নয় একদিনের দুর্গাপুজো, এমনই রীতি চলে আসছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের হিরাপুর থানার অন্তর্গত ধেনুয়া গ্রামের কালীকৃষ্ণ যোগাশ্রমে। এই পুজোয় একদিনেই দেবীর সপ্তমী অষ্টমী নবমী ও দশমীর পুজো হয়। আর এই একদিনের পুজো অনুষ্ঠিত হয় মহালয়ার পুণ্য তিথিতে। জানা যায় এই পুজো শুরু হয়েছিল ১৯৭৮ সালে কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুরের হাত ধরে । কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুর ছিলেন একজন ব্রাহ্মণ পণ্ডিত ও ধার্মিক মানুষ। পাশাপাশি তাঁর পরিচিতি ছিল একজন সমাজসেবী হিসেবেও। গ্রামবাসী ও গ্রামের উন্নতির জন্য কাজ করতেন তিনি। তিনি বিশ্বাস করতেন যে দুর্গাপুজো একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং এই অনুষ্ঠান গ্রামবাসীদের মধ্যে ধর্মীয় ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এই ভাবনা থেকে কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুর গ্রামবাসীদের সাথে আলোচনা করে ১৯৭৮ সালের মহালয়ার দিনে একদিনের দুর্গাপুজোর শুরু করেন। তিনি নিজেই পুজোর সমস্ত আয়োজন করেন। প্রথমে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন এবং একটি ছোট মন্দির তৈরি করেন। সেখানে নিজেই মূর্তি তৈরি করেন এবং পুজোর আচার-অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এই পুজোর বৈশিষ্ট্য হল এখানে মা দুর্গার সাথে তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা থাকেন না। তার বদলে মা জগদ্ধাত্রীর দুই সখী জয়া ও বিজয়া বিরাজ করেন।
কথিত আছে সাধক তেজানন্দ ব্রম্ভচারী সাধনা বলে মায়ের এই মূর্ত রূপ অবলোকন করেছিলেন। কালীকৃষ্ণ সরস্বতী ঠাকুরের মৃত্যুর পর, তার পুত্র তরুণ সরস্বতী ঠাকুর পুজোর দায়িত্ব নেন। তিনি তার পিতার আদর্শ অনুসরণ করে পুজোকে আরও সুন্দর ও ঐতিহ্যবাহী করে তোলেন। আজ, ধেনুয়া গ্রামের একদিনের দুর্গাপুজো একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই পুজো দেখতে আসেন। ভিন জেলার ভক্তরাও ভিড় জমান এই পুজোয়। থাকে ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা।