সংগীতা চৌধুরী(চ্যাটার্জী)ঃ- স্বামী সোমেশ্বরানন্দ মহারাজকে একবার একজন ভক্ত প্রশ্ন করেছিলেন যে, “আপনি লিখেছেন ঈশ্বর সবসময় উন্মুখ হয়ে আছেন দেবার জন্য, না চাইতেই দেন। আমি সাধারণ মানুষ কীভাবে বুঝবো এটা? আমার অতো সাধনা নেই।”
এর উত্তরে মহারাজ বলেছিলেন যে, ভগবানের কৃপা বুঝবার জন্য সাধনার প্রয়োজন হয়। সাধনা না থাকলে ভগবানের কৃপা বোঝা যায় না। তবে কখনো কখনো মানুষের জীবনে এমন কিছু ইঙ্গিত ভগবান দেন যাতে বোঝা যায় এটা আধ্যাত্মিক কৃপা বা গুরু প্রদত্ত শক্তি বা ভগবত কৃপা। খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলে সেই লক্ষণ গুলি বোঝা যায় এবং বোঝা যায় ভগবানের কৃপার বিষয়টিও।
মহারাজের কথায়, “সাধারণ মানুষ হিসেবে কিভাবে বুঝবো যে ঈশ্বরের কৃপাবাতাস বইছে আমার জন্যও? আমার মধ্যে গুরুশক্তি কাজ করছে, কিভাবে অনুভব হবে? আপনি ইঙ্গিত পাবেন। হঠাৎ-হঠাৎ এমন কিছু ঘটনা ঘটবে যা আপনাকে সাহায্য করবে আধ্যাত্মিক পথে এগিয়ে যেতে। আপনি কখনোই আশা করেননি এমন কিছু ঘটবে মাঝে-মাঝেই। যেমন, আপনি সাধনা করার সময় কিছু অনুভব করছেন যার অর্থ বুঝতে পারছেন না। হঠাৎ কোনো বই আপনার হাতে এলো না চাইতেই যে বইয়ে ওই অনুভবের তাৎপর্য ব্যাখ্যা রয়েছে। কিংবা কোনো বিপদ নিজে-নিজেই দূর হয়ে গেল। কেউ একে কাকতালীয় বলতে পারেন। কাকতালীয় ঘটনা ২-১টা হতে পারে, কিন্তু বার-বার ঘটে না। অথচ আপনি দেখবেন মাঝে-মাঝেই এমন ঘটনা ঘটছে আপনার জীবনে।
ফেসবুক দেখতে দেখতে হঠাৎ মনমতো গ্রুপ পেয়ে গেলেন। বন্ধুর সাথে বেড়াতে গিয়ে হঠাৎ এমন কোনো লোকের সাথে পরিচয় হয়ে গেল যিনি আপনাকে নতুন পথ দেখালেন। এমন পথ যা আপনি মনের অগোচরে অনেকদিন ধরেই খুঁজছিলেন। কিংবা হঠাৎই আপনার জীবনে পরিবর্তন শুরু হলো কিছু না করতেই। অর্থাৎ আপনি যা আশা করেন নি, যার জন্য কোনো চেষ্টা করেন নি, কখনও এ নিয়ে চিন্তা করেন নি, এমন কিছু ঘটছে আপনার জীবনে। বৈশিষ্ট্য হলো এই ঘটনাগুলি আপনাকে এগিয়ে দিচ্ছে আধ্যাত্মিক পথে। এগুলিই ইঙ্গিত।
অতএব মনে রাখবেন, আন্তরিকভাবে সাধনা করে গেলে, আপনি অনুভব না করলেও ঈশ্বরের কৃপা কাজ করছে, গুরুশক্তি পথ দেখাচ্ছে আপনাকে। ইঙ্গিতগুলি ধরার চেষ্টা করুন। তবেই কিছুটা বুঝতে সুবিধা হবে। আপনাকে দেওয়ার জন্য ঈশ্বর উন্মুখ হয়ে আছেন সবসময়। দিচ্ছেনও আপনি না চাইতেই। যতই সাধনা করবেন, পরিষ্কার বুঝতে পারবেন।”