নিজস্ব সংবাদদাতা,দুর্গাপুরঃ- আজ ষষ্ঠী, মা দুর্গার বোধন। যদিও শারদোৎসবের রেশ শুরু হয়ে গিয়েছে আগেই। চতুর্থীর রাত থেকেই শহরের দুর্গাপুজো মণ্ডপগুলোতে ভীড়। আনন্দে মেতে উঠেছে আপামর বাঙালি। নতুন পোশাকে নতুন সাজে প্যাণ্ডেল হপিং, খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডা।
কিন্তু সমাজের এমন একটা অংশ রয়েছে যারা এই পুজোর আনন্দ থেকে ব্রাত্যই থেকে যায়। উৎসবের রোশনাই আলোকিত করতে পারে না ওদের দারিদ্রতার অন্ধকারকে। উৎসবের আবহও আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে না ওদের জীবনে। সবাই যখন আনন্দে মেতে ওঠে তখন ওরা ডুবে একরাশ অবসাদে। শহরের এরকম দারিদ্রের অন্ধকারে ডুবে থাকা কিছু মানুষের পাশে দাঁড়ালেন দুর্গাপুরের এক সমাজসেবী তথা শিক্ষক চিরঞ্জিত ধীবর। কুসুমতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক চিরঞ্জিতবাবু এবার বোনাসের টাকায় নতুন জামাকাপড় নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ওদের কাছে। এছাড়াও তাকে অর্থ দিয়ে সাহায্য় করেছেন কিছু সহৃদয় ব্যক্তি। মুচিপাড়ার শিবাজী পার্ক আটিআই বস্তি, এইচএফসি গেট বস্তি এলাকার ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১৯৩ জনের হাতে তিনি এবার পুজোর নতুন জামা ও জুতো তুলে দেন। শুধু নতুন জমা জুতো দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি চিরঞ্জিতবাবু। এদের মধ্যে থেকে ২৫ জন কচি-কাঁচা, কিশোর কিশোরীকে নিয়ে প্যাণ্ডেল হপিংও করেন। মুচিপাড়া, স্যান্টোস, সেক্টর-২সির মতো শহরের বড় বড় পুজো প্যাণ্ডেল ও প্রতিমা দর্শনের পাশাপাশি পেট পুজোর ব্যবস্থা করতেও ভোলেন নি চিরঞ্জিতবাবু। প্যাণ্ডেল হপিং করতে করতে আর পাঁচ জনের মতো ওরাও প্যাণ্ডেলে প্যাণ্ডেলে ঘুরতে ঘুরতে খেল এগ রোগ, মিষ্টি। চেটে পুটে রীতিমতো আস্বাদন করল পুজোর আমেজ, সমাজের আর পাঁচ জনের মতো করে, আর পাঁচজনের সঙ্গে মিশে। ওদের কাছে এই অন্যরকম পুজো পরিক্রমার স্মৃতি রয়ে যাবে সারা জীবন।
অন্যদিকে চিরঞ্জিতবাবুর কাছেও এবারের পুজো অন্যরকম হয়ে থাকল। চিরঞ্জিতবাবুর মতে পরিবারের আর সকলে যখন পুজোর আনন্দে মেতে উঠবে তখন পরিবারের একটা অংশ সেই আনন্দ থেকে ব্রাত্য থেকে যাবে সেটা মনে মনে মেনে নিতে পারেননি, তাই এই উদ্যোগ। কারণ চিরঞ্জিতবাবু শহরের এই বস্তিবাসীদের নিজের পরিবারের অংশ বলেই মনে করেন যে।