সন্তোষ কুমার মণ্ডল, আসানসোলঃ- পোলিও ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে এক ২ বছরের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। ঘটনা আসানসোলের বারাবনি ব্লকের কেলেজোড়া গ্রামীণ হাসপাতালের। ঘটনায় হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার বারাবনি ব্লকের বিএমওএইচ-কে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় মৃত শিশুর পরিবার ও এলাকার বাসিন্দারা। পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায় বারাবনি ব্লকের পুঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কেলেজোড়া গ্রামীণ হাসপাতালে গত ৮ নভেম্বর বুধবার সকালে বারাবনি থানার কাটাইডাঙ্গা গ্রামের আদিবাসী পরিবারের দু মাসের শিশুকে পোলিও ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এরপর শিশুটির মা শিশুটিকে নিয়ে বাড়ি চলে যান। পরিবারের দাবি ওই দিন শিশুটি স্বাভাবিক থাকলেও বৃহস্পতিবার ভোরে শিশুর মা দেখেন শিশুটির নাক দিয়ে রক্ত এবং মুখ দিয়ে ফেনা বেরোচ্ছে। তড়িঘড়ি শিশুটিকে নিয়ে তারা কেলেজোড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এরপরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে মৃত শিশুর পরিবার। তাদের অভিযোগ, ভ্যাকসিনের জন্যই তাদের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে শিশু মৃত্যুর খবর পেয়ে কাটাইডাঙ্গার আদিবাসী পাড়ার লোকজনও হাসপাতালে ছুটে যায় ও বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় হাসপাতাল চত্বরে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বারাবনি থানা বিশাল পুলিশ বাহিনী ও আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি ( হিরাপুর) ঈপ্সিতা দত্ত ও হিরাপুর বারাবনি থানার সার্কেল ইনস্পেক্টর শিবনাথ পাল। পুলিশ আধিকারিকরা মৃত শিশুর বাবা ও মায়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
যদিও পোলিও ভ্যাকসিন দেওয়ার শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে মানতে চাননি বারাবনি ব্লকের বিএমওএইচ নাজরিন রহমান। তিনি জানান, ওই ভায়াল থেকে আরো ৯ জন শিশুকে বুধবার পোলিও ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিলো। তারা সবাই ঠিক আছে। এছাড়াও যখন ওই শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয় তার মায়ের সঙ্গে, তখন সে স্বাভাবিক ছিলো। তারপর এদিন ভোরবেলা শিশুটিকে অচৈতন্য অবস্থায় আনা হয়। তখন চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে মৃত শিশুর পরিবারের লিখিত অভিযোগ দায়ের করায় এদিনই আসানসোল জেলা হাসপাতালে মৃত শিশুর ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে পুলিশ। বারাবনি থানার পুলিশ জানায়,ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এর পাশাপাশি পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান জানান, শিশুর মৃত্যুতে পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ঘটনার তদন্ত শুরু করছে।