বিশেষ সংবাদদাতা, বাঁকুড়া: ফের এক ঠিকা মজুরের মৃত্যু হলো ডিভিসি’ র মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। গত সপ্তাহেই ওই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে এক ঠিকা মজুরের মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবারের দুর্ঘটনায় মৃত মজুরের নাম তাপস রায় (৪৬)। তার বাড়ি বড়জোড়ার হাট আশুড়িয়ার সাবগ্রামে। কাজের সুবাদে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছেই লাগাপাড়ায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। এই নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে দুই ঠিকাকর্মীর মৃত্যুতে প্ল্যান্টে শ্রমিক সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। শ্রমিক মহলে, শ্রমিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে জোরালো সওয়াল করা হয়েছে শ্রম দপ্তরের নিয়োজিত সুরক্ষা আধিকারিকের ভূমিকা নিয়েও।
এদিন ঘটনার পর মৃতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। পরে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কর্তৃপক্ষ। মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প প্রধান সুশান্ত সন্নিগ্রহী বলেন, ‘ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে আলোচনা চলছে’।
জানা গিয়েছে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোল হ্যান্ডেলিং প্ল্যান্টের কর্মী ছিলেন তাপস রায়। সেখানে কয়লা ভাঙার মেশিনের বেল্ট ছিঁড়ে গেলে এদিন সকালে তার মেরামত করছিলেন তিনি। আচমকা ওই বেল্ট কিছুটা ঘুরে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। তার জেরে শরীরে গুরুতর চোট পান তাপস। অন্যান্য শ্রমিকরা দ্রুত তাঁকে নীচে নামিয়ে আনেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। যদিও অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছনোর আগেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। এরপর মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শ্রমিকরা। প্ল্যান্টের ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের নেতা উজ্জ্বল ঢাং, প্রনব কর্মকার বলেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে দু’টি ঘটনা এটাই প্রমান করছে যে, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিকদের সুরক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই। দাবি জানাচ্ছি, এখানে শ্রমিকদের যথাযথ সুরক্ষা দিতে হবে। মৃতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে’।
উল্লেখ্য, এর আগে ৫ মার্চ সকালে প্ল্যান্টের ভিতরে লিফট মেরামতের কাজ করার সময় নীচে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় এক ঠিকাকর্মীর।