eaibanglai
Homeএই বাংলায়যেখানেই সবুজের আহ্বান সেখানেই দুখু মাঝি

যেখানেই সবুজের আহ্বান সেখানেই দুখু মাঝি

শুভ্রাচল চৌধুরী, বাঁকুড়াঃ– বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বি.সি.কে.ভি) মোহনপুর নদীয়ার ৫১ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হল সাব ক্যাম্পাস শুশুনিয়া কৃষি মহাবিদ্যালয়ে। আর এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাঁকুড়ায় এলেন দুখু মাঝি। দুখু মাঝি হলেন পশ্চিমবঙ্গের একজন সক্রিয় নামকরা পরিবেশবিদ, যিনি ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ অসামরিক পদ্মশ্রী সন্মানে ভূষিত হন। ছোট্ট করে বলে নেওয়া যাক তাঁর গল্প।

দুখু মাঝির জন্ম ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে অধুনা পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অযোধ্যা পাহাড়তলির সিন্দরি গ্রামে। স্কুলে যাননি, বাড়িতে লেখাপড়াও করেন নি, কিন্তু পনেরো বছর বয়সেই উপলব্ধি করেন, গাছ মানুষের জীবনে অত্যন্ত উপকারী। নিজের কাকার সঙ্গে গাছ লাগানো শুরু করেন। তারপর বন দফতরের আধিকারিকের কাছে শুনেছেন গাছ অক্সিজন দেয় আর সেজন্যই মানুষ শ্বাস নিতে পারে। সেই থেকে খাতাকলমে নিরক্ষর দুখু মাঝি শুরু করেন গাছ লাগাতে এবং ক্রমে বনসূজন হয়ে যার তার নেশা। বনদফতর থেকে উপহার পাওয়া সাইকেলে মাটি, সার, গাছের চারা এমনকি বালতি ভরে জল নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে গাছ লাগান ও বনসৃজন চালান। বিগত পাঁচ দশক আগে থেকেই নিরন্তর এই কাজ করে চলেছেন তিনি। নিজের গ্রাম সিঁদরি ছাড়াও সড়কড়ি, চড়িদা, ঘোড়াবাঁধা, হরিডিসহ পুরুলিয়ার বহু এলাকায় ৫০০০ এর বেশি বট, অশ্বত্থ, আম, জাম, তেঁতুল, পলাশসহ নানা গাছ ইতিমধ্যে লাগিয়েছেন।

শুশুনিয়া কৃষি মহাবিদ্যালয়ে এসে পদ্মশ্রী ভূষিত দুখু মাঝি বলেন যে, “যেখানেই সবুজের আহ্বান সেখানেই তিনি।” এমনিতেই মহাবিদ্যালয়ে রয়েছে প্রচুর গাছগাছালি। গ্ৰীষ্ম থেকে বর্ষা প্রতিটা ঋতুতেই যেন সেজে থাকে এই প্রতিষ্ঠান। দেখা যায় পলাশের লাল রক্তিম শোভা আবার বর্ষায় সবুজের আলিঙ্গন। দুখু মাঝি কৃষি মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের আরও বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। বাঁকুড়ার মাটি রুখা শুখা, অনেকটাই পুরুলিয়ার মত। তিনি বলেন, “পরেরবার যখন আসব তখন যেন আরও সবুজ দেখতে পাই।” পরিবেশকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে কিংবা পরিবেশ রক্ষা করতে “গাছ দেয় অক্সিজেন” এই কথা জানার পর গাছ লাগানো শুরু করেন তিনি, সেই শুরু আর থামেনি। থামেনি তার সাইকেল। বাঁকুড়ার ছাত্র-ছাত্রীরাও তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হল।

এদিনের এই বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহাবিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট ডিন প্রফেসর সুশান্ত কুমার দে, সর্বশিক্ষা মিশন বাঁকুড়ার ডিস্ট্রিক্ট প্রজেক্ট অফিসার শুভঙ্কর দাস, ছাতনার বিডিও সৌরভ ধল্ল, মেজিয়ার বিডিও শেখ আবদুল্লাসহ অন্যান্য সরকারি আধিকারিক ও কলেজের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা ও শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments