সন্তোষ কুমার মণ্ডল,আসানসোলঃ- বালি পাচার নিয়ে বছর খানেক আগেই উত্তাল হয়েছিল রাজ্য। অভিযোগ শাসক দলের কিছু নেতার মদতে দামোদর, দ্বারকেশ্বর, অজয়, ময়ূরাক্ষী সহ এই রাজ্যের একাধিক নদীর বুকে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ বালির খাদান। এইসব খাদান থেকে বেআইনিভাবে বালি উত্তোলনের ফলে একদিকে যেমন সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে তেমনি নদীর বুকে জেসিবি ব্যবহার করে বালি তোলার ফলে একাধিক নদীর সেতুগুলি দুর্বল হয়ে পড়ছে। যেকোনো মুহূর্তে সেগুলো ভেঙে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। কোথাও আবার পরিবেশের তোয়াক্কা না করে নদীর বুকে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে নদীর গতিপথের পরিবর্তন হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত বালি বোঝাই গাড়িগুলো যে রাস্তা দিয়ে ছোটে সেই রাস্তাগুলো অল্প সময়েই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাচারের তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন শাসক দলের তাবর নেতাও। বর্তমানে চলছে এই সংক্রান্ত মামলা। তার সঙ্গে যে বালি পাচারও রমরমিয়ে চলছে তার প্রমান মিলল সাম্প্রতিক এক ঘটনায়।
গত শুক্রবার চারটি বালি বোঝাই ট্রাক্টর বাজেয়াপ্ত করলো আসানসোলের কুলটি থানার শাঁকতোড়িয়া ফাঁড়ির পুলিশ। এরমধ্যে দুটি ট্রাক্টর সুভাষমোড় ও দুটি গাঙ্গুটিয়া রোড থেকে আটক করা হয়। ঘটনায় দু’জন ট্রাক্টর চালককে আটক করা সম্ভব হলেও বাকিরা পালতে সক্ষম হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেআইনী ভাবে বালি পাচারের খবর পেয়ে ওইদিন আলাদা আলাদা দুটি জায়গায় অভিযান চালানো হয় ও তাতে সাফল্য মেলে। এছাড়া মাঝে মাঝে মঙ্গলকোট, আউসগ্রাম, কাঁকসা, গলসী সহ নদী সংলগ্ন বিভিন্ন থানার পক্ষ থেকে অবৈধভাবে বালি বহনকারী গাড়ি আটকের খবর পাওয়া যায়।
অন্যদিকে পুলিশ প্রশাসনের এইসব তৎপরতায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের দাবি এই ধরনের অভিযান নিয়মিত চালাতে হবে। গ্রেপ্তার করতে হবে অবৈধ বালি খাদানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত নেতা ও প্রশ্রয়কারীদের। পাশাপাশি অবৈধ বালি খাদান বন্ধে শাসকদলের নেতাদের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তাঁরা।